সম্পাদকের কলমে


সম্পাদকের কলমে

সংকটকালের নতুন একটা সমার্থক শব্দের খোঁজ পেলাম তবে আমরা। করোনাকাল। সেই করনোকালে, মানুষের জীবন ও মৃত্যুর ভিতর ব্যবধান কমতে কমতে শুধু একটা হাঁচি কি একটা কাশিতে এসে দাঁড়িয়েছে। কিংবা হয়তো একটুকু ছোঁয়াই জীবন মৃত্যুর ভিতর ব্যবধান দূর করতে যথেষ্ঠ। না আমরা আর ছোঁয়াছুঁয়ির ভিতরে নাই। তাই চোখের সমানে একজন রুগীর এম্বুলেন্সে ওঠার প্রাণান্তকর চেষ্টা বার বার ব্যার্থ হতে দেখেও, মোবাইলে সেই দৃশ্য তুলতে থাকলেও। মানুষের ভিড় থেকে একজন মানুষকেও খুঁজে পাওয়া গেল না, রুগীকে এম্বুলেন্সে তুলে দেওয়ার। সকলের চোখের সামনে মনুষ্যত্বের ছোঁয়াটুকু পেল না বলে পথের ধুলোতেই গড়িয়ে গেল একটা অমূল্য জীবন। মানুষের প্রাণ বাঁচানোর কাজ যে প্রতিষ্ঠানের। সেই হাসপাতালের দোরগোড়াতেই। মানুষের সমাজ আজ মনুষ্যত্বের ছোঁয়াটুকু বঞ্চিত। না, এই অবস্থা একদিনে হয় নি। এই অবস্থার জন্য শুধুমাত্র করোনাই দায়ী নয়। দায়ী সমাজিক অবক্ষয়। রাজনৈতিক দূর্নীতির সীমাহীন দুর্বৃত্তায়ন। মানুষ থেকে মানুষের দূরত্ব যত বেশি বৃদ্ধি পেতে থাকবে, ততই মানুষকে এমন ভাবেই পথের ধুলায় জীবন দিতে হবে গড়িয়ে। অথচ মানুষের কথাই ছিল মানুষেরই সাথে থাকার। এই চিত্র কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। একটা সামগ্রিক গ্যাংরিনের খণ্ডচিত্র মাত্র। মানুষের সাথে আর থাকে না মানুষ।

সুরঞ্জন অধিকারী :কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় মৃত্যুচেতনা




কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় মৃত্যুচেতনা
                    

     রবীন্দ্র সমকালে বাংলা কাব্য কবিতায়, রবীন্দ্র চিন্তা চেতনার বাইরে, যে নূতন কাব্যস্বর শোনা গিয়েছিল তা কবি জীবনানন্দ দাশের হাত ধরেই। বাংলা কাব্য কবিতার জগতকে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহীরুহের মতো গ্রস্ত করে রেখেছিলেন। তাকে অতিক্রম করা খুবই কঠিন কাজ ছিল। তবে তা যে অসম্ভব নয়, তা প্রমাণ করেছিলেন জীবনানন্দ দাশ। সমকালীন নবীন স্বাতন্ত্র কামী কবিরা, শুরু করেছিলেন রবীন্দ্র বিরোধিতা। সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, কাজী নজরুল ইসলাম, মোহিতলাল মজুমদার প্রমুখ কবিরা, নিজের মতো করে নিজস্ব কাব্য প্রত্যয় গড়ে তোলার চেষ্টা করলেন। জীবনানন্দের প্রথম কাব্য "ঝরা পালকে" (1927) কিছুটা রবীন্দ্র প্রভাব থাকলেও, তিনি তা অচিরেই অতিক্রম করে যান।

শ্রীপর্ণা গঙ্গোপাধ্যায় : রবীন্দ্রনাথের 'নিষ্কৃতি': কবিতার শরীরে নারীর বন্ধনমোচনের গল্প



রবীন্দ্রনাথের 'নিষ্কৃতি': কবিতার শরীরে নারীর বন্ধনমোচনের গল্প

রবীন্দ্রনাথ মূলত গীতিকবি, আবার তিনি শ্রেষ্ঠ ছোটগল্পকারও। যদি লেখক একাধারে হন  গীতিকবি ও গল্পকার তাঁর পক্ষে তখন গদ্যে গল্প লেখার মত কবিতাতেও  গল্প লেখা সহজ হয়ে ওঠে।  পাঠকও এতে লাভবান হন। লিরিকের ধর্ম  মনে রেখে  কবিতাটিকে  যেমন আস্বাদন করা যায় তেমনি গল্পে চিত্রিত  চরিত্রের সঙ্গেও একাত্মতা অনুভব  করতে পারেন পাঠক। সংরূপের  এই মিশ্রণ  কবিতাকে  আকর্ষণীয়  ও বৈশিষ্ট্যমন্ডিত  করে তোলে। গল্পের  বিষয়বস্তু  যখন  কবিতার আঙ্গিকে  প্রকাশিত হয় তখন সে পাঠককে  এক নতুন রসাস্বাদ দেয়।  যা  শুধু কবিতা বা শুধু গল্প পড়ে পাওয়া যায় না। তবে গল্প বলার এই আঙ্গিকটিকে  সম্পূর্ণ  নতুন বলা  যায়না, রবীন্দ্রনাথের আগেও  কাহিনীকবিতার  একটি ধারা দীর্ঘদিন  ধরেই  প্রচলিত ছিল।  রবীন্দ্রনাথ  তাকে নতুন  রূপ দিয়েছেন, কবিতার আকারে দীর্ঘ কাহিনী বর্ণনা নয়, কবিতায় ছোটগল্পের আস্বাদ তিনি নিয়ে এসেছেন।

লক্ষ্মী নন্দী : পুরাণ সাহিত্যে ঋষি কন্যা বেদবতী তিনি সীতা আবার তিনিই দ্রৌপদী




পুরাণ সাহিত্যে ঋষি কন্যা বেদবতী
তিনি সীতা আবার তিনিই দ্রৌপদী

রূপকের শৃঙ্গারে, প্রতীকের ইশারায় দুটো নারী চরিত্র লেখার ইচ্ছে নিয়েই আজ কলম ধরলাম। অবশ্য আমার অনুভব বলে, লেখা শুরু করাটা লেখকের ইচ্ছে, তারপর কলম বা লেখা নিজ গতিতে চলে। আমি যেটা বলতে চাইছি যে এই লেখায় সীতা আর দ্রৌপদীকে নিয়ে কোনও  বাদানুবাদে যাবনা। সে সব তো করবেন বা করেছেন পণ্ডিতেরা। তবে কখনো কখনো মনে হয় পুরাণ, রামায়ণ, মহাভারত সবই তো রচনা করেছেন পুরুষ কবি। তাই কি তাঁরা ইচ্ছে মতো সীতাকে পাতালে পাঠিয়েছেন? কুন্তীর মুখ দিয়ে দ্রৌপদীকে পঞ্চপাণ্ডবের উপভোগ্যা করে তুলেছেন? আবার এই নারীদেরকে সামনে রেখেই রাবণ বধ থেকে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সূচনা করেছেন? সেই জন্যেই কি আজও ঘরে ঘরে ঝগড়া লাগলে প্রথমেই আঙুল তোলা হয় মেয়েদের দিকে? যদিও এ প্রশ্নটা অনেকেরই। তাই আবার বলছি এটা আমার  লেখার বিষয় নয়। আমার লেখার গতিমুখ রেখেছি উপমার প্রতীকী ভাবনায় সীতা ও দ্রৌপদী। পাঠক মহলের প্রতি পরম শ্রদ্ধা রেখে এই  ইচ্ছেটা বারবার বলার কারণ হল পুরাণ সাহিত্যের সব কাহিনিতেই রয়েছে ধর্ম এবং রাষ্ট্রশাসনের মধ্য দিয়ে সমাজজীবনে নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার চেষ্টা। রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় নিয়মকানুন এবং সে-সবের বিধিনিষেধ। মানে পারলৌকিকতা আর আধ্যাত্মিকতাকে বাদ দিয়ে  ইহজাগতিক সমাজ নিয়ে যদি  বলি, তাহলে দেখা যাবে, রাষ্ট্র ও ধর্ম উভয়েরই মূল উদ্দেশ্য, সমাজ নিয়ন্ত্রণ করা।

ফাল্গুনী দে : মৃত্যু ও ভালবাসার অনন্ত মহাসাগর




মৃত্যু ও ভালবাসার অনন্ত মহাসাগর


সমুদ্র ক্যানভাসে ঢেউ রঙ

"সে দেখে নিয়েছে জলের গভীর কত ঐশ্বর্যময়
জেনে নিয়েছে তরল অন্ধকার কত আকর্ষক
সে এখন এক মহাসাগর থেকে অন্য মহাসাগরে সাঁতরে বেড়ায়
পথে কত নতুন প্রবাল ও মাছেদের সঙ্গে দেখা হয়
সে আর ফিরতে চায় না কোনদিন
ক্লান্ত হলে জিরিয়ে নেয় ডুবে যাওয়া জাহাজের ডেক-এ
উপরে তখন সকাল। তল্লাশি আর পুলিশ। মৃত্যুর খবর
সভ্যতা আজও ভালোবাসার সঙ্গে মৃত্যুকে গুলিয়ে ফেলে।"

নাসির ওয়াদেন : সাহিত্য নদীর ধারা, বাঁক ভেঙে চলেছে সমুখ পানে




সাহিত্য নদীর ধারা, বাঁক ভেঙে চলেছে সমুখ পানে
              

যেকোনো ভাষায় সাহিত্য রচিত হয়ে থাকে সেই এলাকার নিজ ভাষাভাষী অধিবাসীদের নাগরিকদের কৃষ্টি,কালচার,আচার,আচরণ ভাব, ভালোবাসা ও তাদের দৈনন্দিন জীবনের ঘটনা প্রবাহ থেকে। তার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায় সেই ভূখণ্ডের ভৌগোলিক ও সামাজিক তথা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট।যুগের ও সময়ের প্রেক্ষিতে মনন চর্চা ও সৃষ্টির প্রকরণের মধ্য দিয়ে সাহিত্যের সুললিত ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হয়ে চলে এঁকেবেঁকে গতিপথ পাল্টিয়।এই পরিবর্তন বাঁক বদল কালের প্রেক্ষিতে শুধু নয়,মানুষের রুচিবোধ,চিন্তাবোধ,পারিপার্শ্বিক আবহাওয়া সামাজিক কার্যকলাপ এবং ভাবনার উদ্রেকে পুষ্টতা লাভ করে।যুগের একটা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব সেই সাহিত্যের অঙ্গনে সূর্যোদয়ের আভার মত উজ্জ্বল হয়ে জ্বলতে থাকে‌।

অলভ্য ঘোষ : সাধারণের রবীন্দ্রনাথ




সাধারণের রবীন্দ্রনাথ

রবীন্দ্রনাথ দেখিতেছি কোটেশনে মুখ রগড়াইতেছেন তিনি মানুষ হইতে চাহিয়াছিলেন,  আমরা তাহাকে ঠাকুর বানাইয়া ছাড়িয়াছিএখন কাকে তাহার মাথায় পটি করিতেছেঠাকুরের গায়ে কুকুর ঠেং তুলিয়া যা করারকরিয়া চলিয়াছে। প্রতি মোড়ের মাথায় রিকশা স্ট্যান্ডের  গায়ে  আমাশাক্রান্ত বাঙালি যেমন কপালে হাত ঠুকিয়া শনি দেবতাকে বলিতেছে দুঃসময়টা পার করিও হে ঠাকুর, তেমনি মূর্তি গড়িয়াছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। বাঙালির হাঁচিতে-কাসিতে-বিবাহে-শ্রাদ্ধে তাহাকে টানিয়া স্বর্গ হইতে নামাইতেছেচুরি হইলেও তিনি আমাদের নোবেল ঠাকুর। আমরা তাহাকে মাদুলির ন্যায় ধারণ করিয়াছিতবে সবুজ উদ্ভিদের ন্যায় রবির কিরণে সালোকসংশ্লেষ আত্তীকরণ করিতে পারিলে ভাল হইতোক্লোরোফিলের মতো আমাদেরও কোনো সজীব সজীবতার জন্ম হইয়া উঠুক

তনিমা হাজরা : কবিতার শরীর মন




কবিতার শরীর মন

(১)

কবিতা যখন যাপন হয়ে ওঠে তখন আমরা কবিতার মধ্যে আর কবিতা আমাদের মধ্যে মিশে একাবার হয়ে যায়। শব্দ নিয়ে, ছন্দ নিয়ে,  ভাব নিয়ে আমরা তখন খেলি,  প্রতিবাদ জানাই,  আমোদ করি,  ভালবাসি। কবিতার বিভিন্ন প্রচলিত ফর্মকে দুমড়ে মুচড়ে ভেঙে নিজের মতো করে বানিয়ে আমি আমার একটি পরীক্ষামূলক কোলাজ বানিয়েছি। এতে কবিতার পুরনো আঙ্গিক ও আকৃতির সাথে সাথে তাকে কিছুটা পালটে নিজের মতো করে গড়ব আমি। আশা করব আপনারা শুধু প্রশংসা করবেন না, মন দিয়ে  পড়ে তার যুক্তিপূর্ণ আলোচনা ও সমালোচনাও করবেন।

#উৎসর্গ-- যার সাথে দেখা হবার পর ভালবাসার প্রকৃত অর্থ বুঝতে পেরেছি।।

তৈমুর খান : ব্যাপ্তিময় আত্মোন্মচনের কবি বিভাস




ব্যাপ্তিময় আত্মোন্মচনের কবি বিভাস


কবিতা একটা মুহূর্তের হলেও মুহূর্ত মহাকালেরই অংশ। সুতরাং মুহূর্তই মহাকালেরই সমষ্টি। প্লেটো Timbacus গ্রন্থে বলেছেন : Moving Image of eternity. সমস্ত ছবিই মহাকালের অন্তর্ভুক্ত। তেমনিভাবেই ব্যক্তি ব্যষ্টির অংশ। ব্যষ্টি শাশ্বত প্রবহমান জীবনাচার । মানবসমষ্টি । কবি বিভাস রায়চৌধুরী এই মুহূর্তের উত্থানেই মহাকালের দরোজা খুলেছেন ।

ব্যক্তি-অনুভূতির প্রচ্ছায়ায় চিরন্তন মানব-অনুভূতির কথাই বলেছেন। তাই তাঁর চেতনা ও জাগরণে স্বপ্নকে, ইহজন্ম এবং পূর্বজন্মকে একসঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছেন। তাঁকে যেমন মেঘের মধ্যে দেখি, তেমনি বৃষ্টির মধ্যে, মাটির মধ্যে, গাছের মধ্যেও তাঁর সর্বাত্মক ব্যাপ্তির চলাচল থাকে। তাঁর কবিতা শুধু পার্থিব দেনা-পাওনায় বন্দি থাকেনি, তা পরিব্যাপ্ত হয়েছে অপার্থিবতায়, রহস্যে, ভাষাহীন অগোচরের বোধে। খিদের মতো জৈববৃত্তিও আবহমান মানবচরিত্রে রূপ পেয়েছে অনপনেয় প্রবৃত্তি হয়ে। নিজেকে “উদ্বাস্তুর ছেলে" বলেও এই বিশ্ববোধের দূরে সরে থাকেননি। সমস্ত ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় তাঁর কবিতার সংলাপগুলি নিজের সঙ্গেই কথা বলা মনে হয়েছে।

পারমিতা ভৌমিক : ঘুম ও যন্ত্রমানব কুম্ভকর্ণ




ঘুম ও যন্ত্রমানব কুম্ভকর্ণ

ঘুম কথাটির সঙ্গে ভারতবর্ষের সাধনা, মহাকাব্যের চরিত্র ও ভাঁড়ামি জাতীয় বহু কথা মাথায় এসে গিজগিজ করে। যেমন ধরা যাক রামায়ণের কুম্ভকর্ণছয় মাস ঘুমোয় ও পরে নির্দিষ্ট সময় জেগে ওঠেঅকালবোধন হলেই তার মৃত্যু। এমত কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙিয়ে মহা প্রতাপ রাবণ ভাইটিকে জলাঞ্জলি দিলেন আপন স্বার্থেএতো গেল দেশের স্বার্থের নাম করে ঘুম ভাঙানো বা চিরঘুমে বিলীন করে দেওয়ামানুষ তো মরণ ঘুমে আজ জেগে ঘুমোচ্ছেঅজ্ঞানতার ঘুম; জীবনের সর্বক্ষেত্রে। মৃত্যুও তাই মানবজীবনে কুম্ভকর্ণের মৃত্যুর মতই অনিবার্য।

বঙ্গ রাখাল : মজিদ মাহমুদের কবিতায় আধ্যাত্মিক প্রভাব




মজিদ মাহমুদের কবিতায় আধ্যাত্মিক প্রভাব

বাংলা কবিতার সূত্রপাত বৈদিকতান্ত্রিকতার বিশ্বাস মিশ্রিত আলো-আঁধারের গূঢ়্যরহস্যময় কবিতাকে আশ্রয় করে, যা আমাদের আকাঙক্ষাময় জীবনবোধনিষ্ঠ অনুভূতি; এ অনুভূতি থেকেই জন্ম নেয় কবিতা। কবি যখন কবিতা রচনা করেন তখন তাঁর সামনে এসে উপস্থিত হয় প্রাচীন, বর্তমান, অতীত। এ সময়পর্বে জ্ঞানচক্ষুর সন্মুখে মেলে ধরে ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভূগোল, নৃতত্ত্ব, অর্থনীতি, ধর্মনীতি, সমাজবিজ্ঞান, রাজনীতি, শিল্প-সাহিত্যের সার্বিক জ্ঞান; যার সাথে কবি মিশ্রণ ঘটান তাঁর কল্পনা শক্তির রূপ, রস আর রঙ। এ রূপ রস আর রঙের মিশেলে ভূমিষ্ট হয় কবিতা। কিন্তু এ কবিতা কি সব সময়ই একই ধারায় প্রবাহিত হয়েছে? না, তা হয়নি। ক্ষণে ক্ষণে পাল্টে গেছে কবিতার ভাষা, শব্দের ব্যবহার। চর্যাপদের কবিতায়-

বিপ্লব চক্রবর্তী : সোশ্যালমিডিয়া এবং বাংলা কবিতা




সোশ্যালমিডিয়া এবং বাংলা কবিতা

রবীন্দ্রনাথের শেষের কবিতার সেই জায়গাটা অনায়াসে আমাদের মনে আনতে পারিশিলং-এ যেখানে অমিত আর লাবণ্য পাশাপাশি বসে ছিলেন, সেখানে একটি ব্যাঙ লাফ দিয়ে জলে পড়লতাই দেখে অমিত-র বলাটা অনেকটা এইরকম ছিলনা কি, মহাকালের নিরিখে দ্বিতীয়বার হয়ত ব্যাঙটিকে লাফ মেরে জলে পড়তে দেখা যাবেনা কিন্তু এই যে আমাদের সামনে লাফিয়ে পড়ল  এই সত্যটাকেও কখনো অস্বীকার করা যাবেনাসেটা কিন্তু অবশ্যই ছিল কবিতার বোধতার আগে একটা চিত্রনাট্য তৈরি হয়েছিল স্থানিক সত্যটাও যে মহাকালের একটা অংশ রবীন্দ্রনাথের কবিস্বত্তা সেটা বারবার আমাদের বোঝাতে চেষ্টা করেছেন

আবার ধরুন, ঋত্বিক ঘটকের "মেঘে ঢাকা তারা" মুভির নায়িকা যখন শেষদৃশ্যে চিৎকার করে বলে ওঠেন "দাদা আমি বাঁচতে চাই"! আলাদা ভাবে ঐ সংলাপটাকে আমার ব্যাক্তিগত অনুভূতিতে কবিতা বলে মনে হয়েছে মানুষ যখন লড়াই সংগ্রামের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে শ্লোগান দেয়, সেটাও একসময় কবিতা হয়ে যায়সুভাষ মুখোপাধ্যায়, বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বহু কালজয়ী কবিতাই সম্ভবত শ্লোগান দর্শন থেকেই তৈরি হয়েছিল

মুখোমুখি হাসিদা মুন



মুখোমুখি হাসিদা মুন


সম্পাদক: সকলের আগে ত্রৈমাসিক রংরুটের পক্ষ থেকে আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। রংরুটের এই বিশেষ সংখ্যায় আপনাকে স্বাগতম। প্রথমেই যে বিষয়টি জানতে চাইবো সেটি হলো, কবিতাই বা কেন? অর্থাৎ কবিতা ছাড়া আরও তো অনেক বিষয় রয়েছে সাহিত্যের। সেখানে কবিতা নিয়ে আপনার আগ্রহের উৎস কি? এবং মোটামুটি ভাবে জীবনের কোন পর্যায় থেকে এই আগ্রহের সূত্রপাত। এবং এই বিষয়ে বিশেষ কারুর প্রভাব যদি থেকে থাকে আপনার জীবনে।

হাসিদা মুন: রংরুটের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এবং এই মাধ্যমের পাঠক্কুলের প্রতি  আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।  কবিতা লেখার সুত্রপাত  কবিতা’ই করে দিয়েছিল শৈশব থেকেই।  কবিতা ছাড়াও অল্প স্বল্প   আরো কিছু প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাস লেখার  চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।   কবিতা হচ্ছে   ছোট্ট পরিসরে বড়  কল্পচিত্রকে  চোখের সামনে মেলে ধরা যায়  সহজেই  এ কারণেই আগ্রহ বাড়ে। তেমন কারো  প্রভাব নেই।

মুখোমুখি হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়



মুখোমুখি হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়


সম্পাদক রংরুট: সকলের আগে ত্রৈমাসিক রংরুটের পক্ষ থেকে আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। রংরুটের এই বিশেষ সংখ্যায় আপনাকে স্বাগতম। আপনার লেখালেখির পরিধি মূলত কাব্যসাহিত্য কেন্দ্রিক। এযাবৎ প্রকাশিত আপনার সব কয়টি বইই কবিতাসংকলন। কবিতার প্রতি এই বিশেষ আগ্রহের সূত্রপাত ঠিক কিভাবে?

হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়:  প্রথমেই রংরুট-এর প্রতি আমার আন্তরিক ভালোবাসা। হ্যাঁ, ঠিকই বলেছেন। আমার লেখালেখির পরিধি মূলত কাব্যসাহিত্য কেন্দ্রিক। যদিও মাঝে মাঝেই আমি কবিতা সংক্রান্ত গদ্য এবং গল্পও লিখে থাকি। কিন্তু কবিতাই আমার পৃথিবী। খুব ছোটবেলা থেকেই আমি নির্জনতা ভালোবাসি। হৈ হট্টগোল চিৎকার চেঁচামেচি ----- এসব আমার জন্যে নয়। তবে এরকম ভাবার কোনো কারণ নেই যে, ছোটবেলায় আমার কোনো বন্ধু ছিল না বা তাদের সঙ্গে আমি কথা বলতে পারতাম না। সবই আর পাঁচটা মানুষের মতো স্বাভাবিক ছিল। শুধু একটাই তফাৎ , সবাই ঘন্টার পর ঘন্টা খেলা চালিয়ে যেতে পারত কিন্তু আমি একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর খেলাধুলা বন্ধুবান্ধব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরতাম। তাছাড়া আরও একটা বিষয় এসময় কাজ করত। বেশিরভাগ জায়গাতেই আমি কোনো কথা বলতে পারতাম না, মানে আমাকে কথা বলতে দেওয়া হতো না। আমার সেই না বলতে পারা কথাগুলো যাবে কোথায় ! সেগুলোই একদিন দেখলাম কবিতা হয়ে বেরিয়ে এলো। আর কবিতার প্রতি আগ্রহের সূত্রপাতটাও অদ্ভুত আমার ক্ষেত্রে। ক্লাস সেভেন এইট থেকেই আমি গাছপালা নদী মাঠ ----- এদের সঙ্গে থাকতে ভালোবাসতাম। সিলেবাসের কবিতাগুলোর মধ্যে দেখতাম ফুল ফল নদী গাছ নিয়ে কত কিছু লেখা। বন্ধুদের গল্প কবিতার মধ্যে দিয়ে পড়তে কে না চায়। আমার ক্ষেত্রেও তাই হল। আনন্দে নাচতে নাচতে কবিতার পৃথিবীতে গিয়ে হাজির হলাম।

মুখোমুখি সুস্মেলী দত্ত



মুখোমুখি সুস্মেলী দত্ত


সম্পাদক রংরুট: সকলের আগে ত্রৈমাসিক রংরুটের পক্ষ থেকে আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। রংরুটের এই বিশেষ সংখ্যায় আপনাকে স্বাগতম। প্রথমেই যে বিষয়টি জানতে চাইবো সেটি হলো, সাহিত্যই বা কেন? অর্থাৎ সাহিত্য ছাড়া আরও তো অনেক বিষয় রয়েছে। সেখানে সাহিত্য নিয়ে আপনার আগ্রহের উৎস কি? এবং মোটামুটি ভাবে জীবনের কোন পর্যায় থেকে সাহিত্য বিষয়ে এই আগ্রহের সূত্রপাত। এবং এই বিষয়ে বিশেষ কারুর প্রভাব যদি থেকে থাকে আপনার জীবনে।

সুস্মেলী দত্ত: ছোটবেলা থেকেই আমি খুব অন্তর্মুখী স্বভাবের ছিলাম।  যেহেতু খুব রক্ষণশীল পরিবারে বড় হয়েছি, সেহেতু বাইরের জগতের নানান সস্তা চটক আমাকে কোনদিন স্পর্শ করেনি। প্রকারান্তরে বলা যায়, আমিই হয়ত সেসব থেকে দূরত্ব বাঁচিয়ে নিজের মনে যাকে বলে, অন্তর্লীন হয়ে থাকার চেষ্টা করতাম। বোধহয় সেই কারনেই ফাইন আর্টস বা ক্রিয়েটিভ আর্টসের সাহিত্য শাখাটি আমার বড় পছন্দের ছিল। মনে পড়ে, ছোটবেলা থেকেই বেশ ছিলাম ভাবুক প্রকৃতির। পরিবার বন্ধুবান্ধব–আত্মীয়স্বজনকে সময় দিয়ে যতটা নিজের জন্য বাঁচত বই পড়তাম গোগ্রাসে। না সে ছোট বড় যে কোন বিষয় ভিত্তিক গ্রন্থ বা ম্যাগাজিনই হোক না কেন। কেন জানিনা মনে হত, আমার সব প্রশ্নের উত্তর বুঝি এই বইয়ের মধ্যেই আছে।  এই বই–ই একমাত্র অবলম্বন, যার মাধ্যমে আমি আমার দুঃখ–শোক যন্ত্রণাগুলোকে জয় করতে পারি, এই কথন চর্চার নিয়মিত অভ্যাসে খুঁজে পাই নিজের অস্তিত্ব।  আর যখন মনের মধ্যে না বলা কথা আর ভাবনাগুলো জট পাকাত তখন একমাত্র লেখাতেই আমি আমার স্বস্তিটি খুঁজে পেতাম। তাই ছোট থেকেই লেখালেখির আগ্রহ। বিশেষ কোন মানুষ বা ঘটনা আমাকে লেখাতে প্রভাবিত করেছিল এমন নয় – আসলে তখন বুঝতাম না এখন বুঝি আমি এর মাধ্যমেই হয়ত  নিজের আমিটাকেই নিরন্তর নিজের মধ্যে খোঁজার চেষ্টা করতাম তাই লেখক জীবনের উৎসবিন্দু বলতে এটাই বলা যেতে পারে।

মুখোমুখি সুলেখা সরকার



মুখোমুখি সুলেখা সরকার


সম্পাদক রংরুট: সকলের আগে ত্রৈমাসিক রংরুটের পক্ষ থেকে আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। রংরুটের এই বিশেষ সংখ্যায় আপনাকে স্বাগতম। প্রথমেই যে বিষয়টি জানতে চাইবো সেটি হলো, কবিতাই বা কেন? অর্থাৎ কবিতা ছাড়া আরও তো অনেক বিষয় রয়েছে সাহিত্যের। সেখানে কবিতা নিয়ে আপনার আগ্রহের উৎস কি? এবং মোটামুটি ভাবে জীবনের কোন পর্যায় থেকে এই আগ্রহের সূত্রপাত। এবং এই বিষয়ে বিশেষ কারুর প্রভাব যদি থেকে থাকে আপনার জীবনে।

সুলেখা সরকার: আমি প্রথমেই রংরুট এবং তার পাঠকদের সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাই। কবিতায় কেন ? এটা ঠিক আমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় কারণ আমি কবিতার পাশাপাশি একজন প্রাবন্ধিকও বটে। তবে এটা ঠিক যে কবিতার প্রতি আমার আগ্রহটা অনেকটাই বেশি। কবিতা লেখার প্রথম শুরুটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো তখন ক্লাস সিক্স 'নর্থ বেঙ্গল আর্ট এন্ড ক্রাফট ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন'র পক্ষে শিলিগুড়ি কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে চিত্রশিল্পীদের নিয়ে ছবি আঁকার ওয়ার্কশপ চলছে। উপস্থিত ছিলেন  চিত্রশিল্পী বিজন চৌধুরী, প্রকাশ কর্মকার, সমীর আইচ, আশিস কাবাসি, দেবাশীষ কাবাসি, দিপালী ভট্টাচার্য এবং অন্যান্য চিত্রশিল্পীরা। কলকাতার 'নান্দীকার' নাট্যগোষ্ঠীর পক্ষে রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত এবং অন্যান্য সদস্যরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিখ্যাত কবি অমিতাভ দাশগুপ্ত। তিনদিন ধরে ওয়ার্কসপ চলছিল সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত প্রথম দিন সকলের ক্যানভাসের সামনে গিয়ে দাঁড়াচ্ছিলাম আর কৌতুহলী জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল আমার। 

মুখোমুখি সুধাংশু রঞ্জন সাহা



মুখোমুখি সুধাংশু রঞ্জন সাহা


সম্পাদক রংরুট: সকলের আগে ত্রৈমাসিক রংরুটের পক্ষ থেকে আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। রংরুটের এই বিশেষ সংখ্যায় আপনাকে স্বাগতম। আপনার লেখালেখির পরিধি মূলত কাব্যসাহিত্য কেন্দ্রিক। কবিতার প্রতি এই বিশেষ আগ্রহের সূত্রপাত ঠিক কিভাবে?

সুধাংশু রঞ্জন সাহা: নমস্কার। আপনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই । ধন্যবাদ জানাই, সাক্ষাৎকারের জন্য আমাকে নির্বাচন করার জন্য । কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাগাজিনে কবিতা লেখা দিয়ে সূত্রপাত হয়েছিল আমার লেখালেখির । তারপর গ্রুপ থিয়েটার ( শাওলি মিত্র নির্দেশিত পঞ্চম বৈদিক ) এর সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে থিয়েটারের জন্য নতুন করে কবিতার প্রেমে পড়া এবং কবিতা আবৃত্তির চর্চা ।  এই রকম একটা সময়ে আমি ট্রান্সফার হয়ে চলে যাই গ্যাংটকে । ফলে আমার নাট্যচর্চা স্তব্ধ হয়ে যায় । সেই সময়েই কবিতার কাছে আত্মসমর্পণ আমার। কবিতাকে আঁকড়ে ধরে থিয়েটার না করতে পারার কষ্ট ভুলে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা ।

মুখোমুখি সমর্পিতা ঘটক



মুখোমুখি সমর্পিতা ঘটক


সম্পাদক রংরুট: সকলের আগে ত্রৈমাসিক রংরুটের পক্ষ থেকে আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। রংরুটের এই বিশেষ সংখ্যায় আপনাকে স্বাগতম। আপনার লেখালেখির সূত্রপাত সম্বন্ধে যদি আলোকপাত করেন। সময়ের পরিধিতে এবং পরিবেশের প্রেক্ষাপটে। জীবনের বিভিন্ন পর্বে কোন কোন বিশেষ ব্যক্তিত্ব আপনার জীবনদর্শনের গড়ে ওঠায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন?

সমর্পিতা ঘটক: রংরুটকেও আন্তরিক ধন্যবাদ। নিজের চিন্তা, কথা বলার এমন পরিচ্ছন্ন পরিসর পেয়ে ভালো লাগছে আমারও। প্রভাবের কথা প্রসঙ্গে প্রথমেই বলতে হয় বাবার কথা। থোড় বড়ি খাড়ার বাঁধনে কখনও বাঁধতে চাননি আমায়। জীবনকে পিপাসুর মতো শুষে নেওয়ার ইচ্ছে বাবার থেকে পাই। যা নতুন, যা অভিনব, যা গভীর, যা স্থূল নয় সেসব কিছুর প্রতি আমার আগ্রহ এসেছে তাঁর কাছ থেকে। বাবা বাতিঘর হলে মা হলেন মাস্তুল। প্রধান চালিকাশক্তি। নিজের সঙ্গীত-জীবন মা ভাসিয়ে দিয়েছেন আমাদের লালনে। ভালো গান, সুর আমার জন্মের আগে থেকেই আমার শিরায় প্রবাহিত। গানের প্রভাব আমার জীবনে বিপুল। দিদি লেখালেখির ক্ষেত্রে বিশেষ করে কবিতা লেখার ক্ষেত্রে ভীষণ সাহস যুগিয়েছে আমায় প্রতিনিয়ত। ওঁর গভীর বোধ, সাহিত্যপ্রীতি, সমালোচনা আমায় আন্দোলিত করেছে ছোটো থেকেই। বিয়ের পর স্বামীর উৎসাহ পেয়েছি নিরন্তর। আমার সব লেখা সেই পড়ে প্রথমে, মতামত দেয়। শ্বশুরমশাই বলেন, ‘লেখা ছেড়ো না’। এছাড়া অগণিত বন্ধু, শুভানুধ্যায়ী, স্বজনের মতামত আমায় এগিয়ে দিয়েছে একটু একটু করে।

মুখোমুখি সমরেন্দ্র বিশ্বাস



মুখোমুখি সমরেন্দ্র বিশ্বাস

সম্পাদক রংরুট: সকলের আগে ত্রৈমাসিক রংরুটের পক্ষ থেকে আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।রংরুটেরএই বিশেষ সংখ্যায় আপনাকে স্বাগতম। আপনার লেখালেখির পরিধি মূলত কাব্যসাহিত্য কেন্দ্রিক। কবিতার প্রতি এই বিশেষ আগ্রহের সূত্রপাত ঠিক কি ভাবে?

সমরেন্দ্র বিশ্বাস:  আমার লেখালেখির শুরু অবশ্যই কবিতা দিয়ে। বাচ্চা বয়সে ট্রানজিস্টার রেডিওতে বা মাইকে গান শুনতাম; খাট পেতে পাড়ার কোন বাড়ির উঠোনে রবীন্দ্র জয়ন্তী হতো, তাতে ছড়া বা ছোট খাটো কবিতা বলার সুযোগও মিলে যেত; ঘরে বৃহস্পতি বারে লক্ষীর পাঁচালি পড়া হতো, শ্রাবণে সারা মাস ধরে পিসি ও প্রতিবেশীরা মিলে সুর করে মনসামঙ্গল পাঠ করতো। এ সবের মধ্য দিয়ে কখন যে নিজের মধ্যে কবিতা ঢুকে গেল, নিজেই জানি না।