সাম্প্রতিক পঞ্চায়েত নির্বাচন ২০১৮ বেশ কয়েকটি সত্যকে খুব
দৃঢ় ভাবেই প্রতিষ্ঠিত করে গেল। যদিও কয়েকটি মামলা এখনো সুপ্রীম কোর্টে ঝুলে রয়েছে।
সেগুলির শেষ রায় না জানা অব্দি শেষ কথা বলাও যায় না। তবে ধরে নেওয়া যাক এবারের এই
নির্বাচনী ফলাফল যদি সত্যই সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক সাংবিধানিক বৈধতা পেয়েই যায়,
তাহলে বেশ কয়েকটি সত্য কিন্তু দিনের আলোর মতোই সুস্পষ্ট হয়ে উঠছে। প্রথমতঃ, বিরোধী
রাজনৈতিক প্রার্থীদেরকে মনোনয়ন পত্র দাখিল করতে না দেওয়ার মতো অসাংবিধানিক কাজও
নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সাংবিধানিক বৈধতা লাভ করতে পারে, যদি শাসকদল সরকার ও
নির্বাচন কমিশন সম্মত হয়। দ্বিতীয়তঃ কোন নির্বাচনের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি আসনে শাসকদলের
দুষ্কৃতিদের বোমা বন্দুক গুলির কাছে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বিরোধী প্রার্থীদের নির্বাচনে
দাঁড়াতে না পারার বিষয়টিও সাংবিধানিক পরিসরে অসম্ভব কিছুই নয়। তৃতীয়তঃ এক
তৃতীয়াংশের বেশি আসনের ফলাফল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় স্থির হয়ে যাওয়াও সাংবিধানিক
ভাবে বৈধ হতে পারে। চতুর্থতঃ মাত্র দুই তৃতীয়াংশ আসনে নির্বাচন হলেও সমগ্র
নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সাংবিধানিক বৈধতা অক্ষুণণ্ণই থাকে।
রংরুট সাক্ষাৎকার - ইমাম গাজ্জালী
রংরুট সাক্ষাৎকার
ইমাম গাজ্জালী
রংরুট: কখনো কি মনে হয়েছে ৭১-এর স্বাধীনতা রংরুট ধরেই এগিয়ে চলেছে? অন্তত
বিগত চার দশকের নিরিখে। বিশেষ করে এই প্রশ্নটি দিয়েই আপনার সাথে আলাপটুকু শুরু
করার কারণ আর কিছুই নয়, বিগত চার দশকের স্বাধীনতার প্রাপ্তি
আর অভিজ্ঞতার বাটখারায় বাঙালির সার্বিক উন্নতির রেখাচিত্রটি কি অনেকটাই বেঢপ দেখায়
না?
আপনার মতামত।
রংরুট সাক্ষাৎকার - অপরাজিতা সেন
রংরুট সাক্ষাৎকার
অপরাজিতা সেন
রংরুট: তিনি
বলেছিলেন “রেখেছো বাঙালি করে মানুষ করো নি”। বাঙালির কূপমণ্ডুক
মানসিকতার ছবিটা বিগত এক শতকে কতটা পাল্টিয়েছে বলে মনে হয়?
অপরাজিতা সেন: আমি
বহুদিন দেশের বাইরে যদিও
প্রতি বছর একবার করে
কলকাতা যাই। কাজেই
আমার মতামত কতটা প্রাসঙ্গিক
হবে জানি না। তবুও
বলি। 'রেখেছো বাঙালি
করে মানুষ করোনি’ কি
ঠিক কূপমণ্ডূকতা বোঝায়?
বোধহয় না। বরং
আমার তো মনে হয়
বাঙালির পৃথিবীর যে কোনো
বিষয়ে একটা মতামত আছে। সে প্রাসঙ্গিক হোক
বা না হোক। সত্তরের
দশকে USIS ভাংচুর হয়েছে কতবার
ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়।
নজরুলের গান : গানের নজরুল - ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়
নজরুলের গান : গানের নজরুল
ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়
ক্যালেন্ডারের সেই তারিখটা ১১ই জৈষ্ঠ্য এলে তাঁর জন্মদিনে নিজেকে জিজ্ঞাসা
করতে ইচ্ছে হয়,
কতটা মনে রেখেছি নজরুলকে ? কি
ভাবে মনে রেখেছি নজরুলকে কিংবা আদৌ মনে রেখেছি কিনা তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্ন
আমাদের থাকতেই পারে কিন্তু একটা উচ্চারণে বোধকরি কোন ভুল নেই যে বাঙালির – অন্নদা শঙ্কর রায়ের অমর পংক্তি “আর সবই ভাগ হয়ে গেছে শুধু, ভাগ হয়নিকো নজরুল” । পণ্যায়নের সর্বব্যাপী থাবার নীচে নজরুল-সৃষ্টি ততটা আলোচিত নয় এই প্রজন্মের কাছে।
অপারেশন মৌলবাদ - সৌমিত্র চক্রবর্তী
অপারেশন মৌলবাদ
সৌমিত্র চক্রবর্তী
১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ এই চব্বিশ বছর পাকিস্তান শাসনে ছিল বিভক্ত বাংলার টুকরো। পূর্ব
ও পশ্চিম নামকরণেই ছিল বিচ্ছিন্নতার আভাস। আসলে পাকিস্তানের শাসকেরা কখনোই
পূর্বপ্রান্তের এই ভূমিকে তাদের উপনিবেশের বেশী কিছুই ভাবতে পারত না। আর এর কারনও
ছিল বহুমুখী। ভাষাগত, খাদ্যাভ্যাসগত, সংস্কৃতিগত পার্থক্য কোনোদিনই দুই প্রান্তকে কাছে তো আনেইনি, উল্টে শাসকের অহমিকায় দূরে ঠেলে দিয়েছিল।
কোন এক শঙ্খ ঘোষ ও মূলধারার বাঙালি বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় - শ্রীশুভ্র
কোন এক শঙ্খ ঘোষ ও মূলধারার বাঙালি
বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়
শ্রীশুভ্র
‘যাদের হৃদয়ে কোন প্রেম নেই প্রীতি নেই করুণার আলোড়োন নেই পৃথিবী অচল আজ তাদের
সুপরামর্শ ছাড়া।‘ বলা ভালো এইরাজ্য অচল আজ
তাদের সুপরামর্শ ছাড়া। কথাগুলি বহুল প্রচলিত বহু ব্যবহৃত। কিন্তু তা সত্বেও
প্রতিদিনকার জীবনে এটাই সত্য। সমাজ এবং সভ্যতায়। কারণটিও জীবনানন্দই বলে দিয়ে
গিয়েছিলেন, ‘যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশী আজ চোখে দেখে তারা।‘ আবার তারাই যে শুধু চোখ দেখে তাই নয়, তারা যা দেখাবে, যতটুকু দেখাবে, দেখতে
হবে শুধু সেইটুকুই। তার বেশি দেখতে গেলেই বিপদ বাড়বে বই কমবে না। আর ঠিক সেটাই ঘটেছে
সম্প্রতি।
দেউলিয়াপনা - অমলেন্দু চন্দ
দেউলিয়াপনা
অমলেন্দু চন্দ
আপনি কি মার্ক্সসিস্ট হিসেবে
অ্যাকোমোডেটিভ হয়ে থাকতে চান! অথেন্টিক মার্ক্সসিজম এর বৈপ্লবিক চেতনাবাদীতা র
সঙ্গে বরাবরের একটা আনব্রিচেবল দুরত্ত্ব থেকে গেছে এ দেশীয় বিপ্লববাদের। শ্রেনীকে নিজবাচক নিছক একটা
অর্থনৈতিক ক্যাটেগরি করে নেওয়া সেই
শ্রেনীর ক্ষমতার আর সীমাবদ্ধতার এক্সপ্লয়টেসন, এটা
সম্পুর্ণ ভুলে গিয়ে যে মার্ক্সের চিন্তা ভাবনায় শ্রেনী একটা রাজনৈতিক আর দার্শনিক
ভাবধারার অঙ্গ আর অংশ, তারপর
সেটাকে একটা অদ্ভুত রাজনৈতিক মনস্কতার বাদামী (সাদা বা কালো নয়) স্পেস দিয়ে
ডিসকোর্সের আলো আঁধারীতে অবস্থান বজায় রাখার অ্যাকোমোডেসন।
ধন্বন্তরী কথা - মৌ দাশগুপ্ত
ধন্বন্তরী কথা
মৌ দাশগুপ্ত
মনসামঙ্গল পড়ছিলাম। কবি বিজয়গুপ্তের মনসা মঙ্গল বা পদ্মাপুরাণ মধ্যযুগের
বাংলা সাহিত্যে এক প্রসিদ্ধ গ্রন্থ। পদ্মপুরান বা মনসামঙ্গল গ্রন্থাকারে প্রকাশের
পূর্বে কবি বিজয়গুপ্তের এই মঙ্গল কাব্যটি পালাকারে চারশো বছর টিকিয়ে রেখেছিলেন
বরিশালের রায়ান বা মহিলা গায়েনেরা । কবি বিজয়গুপ্তু জম্মগ্রহন করেছিলেন আজ থেকে
পাঁচশো বছর আগে । পঞ্চদশ শতকে । তার জম্মস্থান বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলাধীন
ফূলশ্রী গ্রামে।আশুতোষ ভট্টাচার্য বিজয়গুপ্তের যথার্থ মূল্যায়ণ করেছেন এই বলে, “বিজয়গুপ্ত দেবতার মাহাত্ম্য রচনা করেন নাই, মানবেরই মঙ্গলগান গাহিয়াছেন।”এইজন্যে পদ্মাপুরাণের গল্প অপরাপর মনসামঙ্গলের মত হলেও অনেক বেশি মানবীয়।এখানে
এক সহায়ক চরিত্র ধন্বন্তরি। মজার কথা ধন্বন্তরি নাম বিভিন্ন পুরাণ উপনিষদে বারবার
উঠে এসেছে। তারা সবাই বাহ্মণ বা বড়জোড় ক্ষত্রিয় কিন্তু এই ধন্বন্তরির পরিচয় বড়
গন্ডগোলের অথচ মজার কথা সব ধন্বন্তরিই কিন্তু জড়ি বুটি গুল্ম লতাপাতা দিয়ে ভেষজ
চিকিৎসায় পারদর্শী।
আজকের বিশ্ব একটি সমীক্ষা - অলভ্য ঘোষ
আজকের বিশ্ব একটি সমীক্ষা
অলভ্য ঘোষ
দুই-শিবিরে ভাগ হয়ে যাচ্ছে নাতো সমস্ত পৃথিবী? পশ্চিমা
রাষ্ট্র গুলোর সঙ্গে বিরোধ দেখা দিয়েছে রাশিয়ার সিরিয়ায় বোমা হামলাকে কেন্দ্র করে। সিরিয়ায় রয়েছে রাশিয়ার একমাত্র নৌ-ঘাঁটি। মধ্যপ্রাচ্য ঘিরে থাকা সাগরেও ন্যাটো ও রাশিয়া
নৌসেনা মোতায়েন করেছে। রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল ঘিরে মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে পৌঁছেছিল।
আঁধারের অবলম্বন - মৌসুমী ঘোষ দাস
আঁধারের অবলম্বন
মৌসুমী ঘোষ দাস
হেমন্ত গুটিগুটি পায়ে শীতের
দোরগোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছে। এখন দুপুরের খানিক পরেই কোন আগাম খবর না দিয়েই ঝুপ করে
অন্ধকার নামে। সন্ধ্যে হতেই কলোনির রাস্তাঘাট শুনশান হয়ে যায়। চাঁপামারি কলোনির
দক্ষিণে পাকুড়তলার পাশ দিয়ে যে রাস্তাটা ডানে বেঁকে নদীর দিকে গেছে, সেই রাস্তার পাশে নদীমুখো একটা টিনের চালা দেওয়া এক কামরার
ঘরে শাশুড়ি শিউলিকে নিয়ে থাকে মিতুন। মা বল, কি বাবা বল, আপনজন বলতে এখন একমাত্র ভরসা
শাশুড়ি। কিছুক্ষণ আগেই বাড়ি ফিরেছে মিতুন। ফিরেই বাথরুমে ঢুকে শাড়ি ছেড়ে, গা ধুয়ে রান্নাঘরে গিয়ে স্টোভ জ্বেলে শাশুড়ির জন্য একটু চা
করে নিয়ে এসেছে।
নজরুল ও রবীন্দ্রনাথ - পারমিতা চক্রবর্ত্তী
নজরুল ও রবীন্দ্রনাথ
পারমিতা চক্রবর্ত্তী
বৈশাখ মাস মানে ঈশ্বরীয় মাস৷ এই মাসেই রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের মত উজ্জ্বল
নক্ষত্রদের সমাবেশ ঘটে৷ কবিপক্ষে নজরুল ও রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে লেখার লোভ সামলাতে
পারলাম না।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে ‘নোবেল পুরস্কার’ পান
তখন কাজী নজরুল ইসলামের বয়স মাত্র ১৪ বছর। বাংলা সাহিত্যের এই দুই মহান কবির মধ্যে
যে গভীর সুসম্পর্ক ছিল তা আমাদের অনেকেরই জানা।
অনন্তের পথে জাদু বাস্তবই কবির আত্মমুক্তির সোপান - তৈমুর খান
অনন্তের পথে জাদু বাস্তবই কবির আত্মমুক্তির সোপান
তৈমুর খান
ম্যাজিক রিয়ালিজম্, মার্ভেলাস
রিয়ালিজম্ এবং ফেবুলিজম্ সব কথাগুলি একই গোত্রের । এসবের বাংলা করলে জাদু বাস্তবতা বা মায়া
বাস্তবতা কথাগুলি পাই । মানুষের বাস্তব জীবন দুঃখ বিষাদ যন্ত্রণায়
পূর্ণ । সেখানে না-পাওয়ার হিসেবই বেশি ।
সেই একঘেয়েমি শূন্যতা এবং ক্লান্ত বিপন্নতা থেকে মুক্তির জন্য একটা আলাদা জগতের
খোঁজ করে । সে জগৎ রূপকথার, কল্পনার,
স্বপ্নচারিতার এবং অলৌকিক বা অতিবাস্তবতার জগৎ । এই ধারাটির নামই 'জাদু
বাস্তবতা'
।
বিন্যাস - আইভি চট্টোপাধ্যায়
বিন্যাস
আইভি চট্টোপাধ্যায়
সকাল সকাল ফোন । তপন বন্দ্যোপাধ্যায় । ‘কোন
কমিটিতে নিল তোমায়?’
গুপ্তাসাহেব তখন রীতিমতো ব্যস্ত । গুপ্তা এন্টারপ্রাইজের মালিক বিনোদ গুপ্তা ।
রোজকার মতো আজও বিজনেস স্যুট পরে ফেলেছিলেন ।
লীলাবতী মনে করিয়ে দিয়েছেন, বিকেলে বস্তি উন্নয়ন কমিটির
মিটিং আছে । বলেছিলেন, একপ্রস্থ ধুতি-পাঞ্জাবী গাড়িতে রেখে দেবেন ।
অফিস থেকে বেরোবার আগে বদলে নিলেই হবে । সাতপাঁচ ভেবে গুপ্তাসাহেব আইডিয়াটা বাদ
দিয়েছেন ।
মন কুঠুরী - জয়তী রায়
মন কুঠুরী
জয়তী রায়
------------------------------
৪/ ৪/২০১১ সাল।
---------------------
সারাদিনের মধ্যে বিকেল চারটে বাজলেই, মেজাজ খারাপ হয়ে যায় হিনার। ওই সময় কেমন এক হাওয়া বইবে! আকাশ গোমড়া চোখে তাকাবে!
বারান্দার তারে ঝোলানো খাঁচাতে পাখি ঝিমোবে। রাস্তা দিয়ে টানা সুরে বলতে বলতে যাবে
ফেরিওয়ালা। ঠাকুমা সারাদিন চিল চেঁচান চেঁচালেও চারটের সময় থম মেরে যান। ঘরের
কোনায় একলা, ঝুল পড়া মায়ের ছবি মিট মিট করে অসহায়ের মতো তাকাবে। কি বিচ্ছিরী। কি বিচ্ছিরী এই চারটের
সময়! সে রোজ দুটোর সময় স্কুল থেকে আসে।
বাস নামিয়ে দিতেই মালা মাসীর গজগজানো শুরু---" পারিনা বাপু। এই মেয়ে রেখে
বৌদি পগার পার, দাবাবু ক্ষেপা, ঠাকুমা পাগল, আমি
মরিচি এই মেয়ে নিয়ে। আয়েই মেয়ে। জ্বালাবে না বলে দিলুম। মুরগি ভাত খাও, নখখি মেয়ের মতো শুয়ে পড়ো। চারটেয় তোমার মাষ্টার আসবে। তবে
এট্টু গড়াবো আমি।"
ছ'টা ছাপান্নর বনগাঁ লোকাল - মৈত্রেয়ী চক্রবর্তী
ছ'টা ছাপান্নর বনগাঁ লোকাল
মৈত্রেয়ী চক্রবর্তী
হোটেলের জানলা দিয়ে উঁকি দেয় প্রেমা, ঘুমন্ত নগরী ধরা দেয় তার চোখে। আস্তে করে ব্লাইন্ড উঠিয়ে চেয়ে থাকে সূর্যোদয়ের
দিকে। নিজের জন্মভূমিতে সূর্যোদয় শেষ কবে দেখেছে মনে করার চেষ্টা করে। কিছু সময়ের
মধ্যেই কেমন অস্বস্তি হয়; দৌড়
ঝাঁপ, ব্যস্ততাই যার জীবন, একটা ছুটির জন্য প্রাণ কাঁদে, কিন্তু ছুটি পেয়ে যেন আর নিতে পারে না। এক্ষুনি কোনো কিচ্ছু করার নেই, অথচ রোজের রুটিনে অভ্যস্ত বলে, ঘুম ভেঙ্গে গেছে। বিছানায় গা এলিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে লগ-ইন করতে গিয়ে থেমে যায়
আঙ্গুল, নিজেকে শাসন করে "না এখনি
না।"
এক্সপেক্টেশন - শুভব্রত দাশগুপ্ত
এক্সপেক্টেশন
শুভব্রত দাশগুপ্ত
বাংলা তর্জমা করলেই পাওয়া যাবে, শব্দটি আছে – প্রত্যাশা। কিন্তু, ‘এক্সপেক্টেশন’ আরও অনেক কিছুকে ধরে নেয় বলে আমার ধারণা। তাই নির্দ্বিধায় ওই শব্দটির আশ্রয়
নিলাম। কারন না থাকলে তিলক কলকাতায় ফিরে যেত না, অন্তত
কথা শুনে এমনটাই মনে হয়েছে আমার – বাবা রিটায়ার করলেন যেবার তার
চার বছর বাদে তিলক চাকরী নিয়ে রাঁচি চলে যায়। সেলসম্যান হতে পছন্দ করত না তিলক, তাও মার কথা রাখতে চাকরীটা নিতেই হল। বরাবর চেয়েছিল তিলক
থিয়েটার-স্টেজ-স্ক্রিপ্ট-রিহার্সাল-অভিনয়...
উড়ান - সোনালি পুপু
উড়ান
সোনালি পুপু
১
কি সুন্দর যে মুর্তিটা! দু দিন ধরে হাজার দুয়ারি দেখে চলেছে তিতলিদের গ্রুপ। দেখে দেখে আশ মেটে না। কত সুন্দর জিনিষ, কত মহার্ঘ্য বস্তু মানুষের
সামনে সাজানো রয়েছে অনায়াসে।
দেশটা কত ধনী ছিল আমাদের? বিদেশী তোষণ আর বিদেশীদের শোষণ, এই দুয়ের পর এখন বুঝি আর ছিবড়েটুকু ছাড়া কিছু বাকি নেই। তাই এত দারিদ্র্য চারপাশে। প্রথম
দিন এসেই দোতলার এক শোকেশের কোনায় চোখ আটকে গিয়েছিল তিতলির।
ওরাও মানুষ - শ্রাবণী সিংহ
ওরাও মানুষ
শ্রাবণী সিংহ
আমি তখন স্কুলে পড়ি, ক্লাস
ফোরে। লখ্নৌ-এর এক আত্মীয় বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে
গিয়ে অভাবনীয় অভিজ্ঞতা হল। বৌভাতের পরদিন বাড়ির সবাই তটস্থ, হিজড়েদের ভয়াল ছায়া কখন পড়বে । বাড়িতে বাচ্চা হলে বা বিয়ের পর নতুন
বৌ আসা উপলক্ষ্যে জবরদস্তি ওরা বাড়ি ঢুকে টাকা আদায় করে। ১০/ ১২ হাজার কখনও লাখ টাকাও হতে পারে, যা চাইবে দিতেই হবে। না দিলেই অভিশাপ বর্ষণ-‘ সপরিবারে নাশ হবি, বাচ্চা মরবে বৌ মরবে’ ইত্যাদি
ইত্যাদি। প্রত্যক্ষদর্শী যারা, তারা তা ভালোই জানেন।
উত্তরের নির্বাচিত লিটিল ম্যাগঃ আমাদের অর্জন ও অহংকার - সুবীর সরকার
উত্তরের নির্বাচিত লিটিল ম্যাগঃ
আমাদের অর্জন ও অহংকার
সুবীর সরকার
লিটিল ম্যাগাজিন। ছোট কাগজ। আপাতঅর্থে। কিন্তু বৃহত্তর পরিসরে এগুলো কিন্তু
ছোট নয়। সাহিত্যের যথার্থ আঁতুরঘর হল লিটিল ম্যাগ। তার চরিত্র, তার কর্মকান্ড, তার সততা নিয়ে লিটিল ম্যাগ সাহিত্যের মুল ভরকেন্দ্র। একটা নিরীক্ষাধর্মী লেখা
প্রকাশের সাহস তো লিটিল ম্যাগই দেখাতে পারে। প্রবল ভাঙচুর, তোলপাড় করা জীবনের গল্প অকপটভাবে লিটিল ম্যাগেই স্বছন্দে প্রকাশের জায়গা পায়।
লিটিল ম্যাগ প্রকৃত লেখকের বিচরণক্ষেত্র। লিটিল ম্যাগ আসলে বহুবর্ণ এক নকশিকাঁথা।
অবিরাম চলতে থাকা আবহমানের তাঁতকল। সে সাহসী এবং সত। বাণিজ্যের কারণে, বেষ্ট সেলারের উল্টোপিঠে তার অবস্থান। লিটিল ম্যাগ আসলে এক
লড়াইয়ের নাম। যুদ্ধের গল্পে জড়িয়ে যাওয়া অনবদ্য স্বীকারোক্তি। লিটিল ম্যাগাজিনই
পারে রৌদ্র কিংবা ছায়ায় মাইলের পর মাইলের হেঁটে যেতে।
গরীব মানুষ ফড়িং খাই - পার্থ বসু
পার্থ বসু
ষাটের দশকের মাঝামাঝি। তখন আমার
হস্টেল জীবন। থাকতাম কোলকাতা মাণিকতলার একটি হস্টেলে। বিবেকানন্দ রোড আর কর্নওয়ালিস
স্ট্রীট ( এখন বিধান সরণী) এর মোড়ে। অক্সফোর্ড মিশন হস্টেল। কোলকাতার সবচেয়ে
প্রাচীন প্রাইভেট হস্টেল। প্রেমাঙ্কুর আতর্থীর
মহাস্থবির জাতকে এর উল্লেখ আছে।
ইংরেজি ইউ আকারে বিন্যস্ত প্রতি তলায় ১৫ টি ঘর। সম্ভবত ৪০ টির মত ঘর
আবাসিকদের জন্য। নীচের তলায় দারওয়ানের ঘর। হোস্টেলের ওড়িয়া রাঁধুনি বামুন আর
কর্মচারীদের ঘর। তিনতলায় ফাদারের অফিস। ছাত্রদের জন্য প্রতি ফ্লোরে দুটি করে
টয়লেট। নীচের তলায় ডাইনিং হল আর তার পিছনে আয়তাকার একটি একটানা বিশাল চৌবাচ্চা।
দড়ি বাঁধা বেশ কয়েকটি বালতি।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)