পারমিতা ভৌমিক : ঘুম ও যন্ত্রমানব কুম্ভকর্ণ




ঘুম ও যন্ত্রমানব কুম্ভকর্ণ

ঘুম কথাটির সঙ্গে ভারতবর্ষের সাধনা, মহাকাব্যের চরিত্র ও ভাঁড়ামি জাতীয় বহু কথা মাথায় এসে গিজগিজ করে। যেমন ধরা যাক রামায়ণের কুম্ভকর্ণছয় মাস ঘুমোয় ও পরে নির্দিষ্ট সময় জেগে ওঠেঅকালবোধন হলেই তার মৃত্যু। এমত কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙিয়ে মহা প্রতাপ রাবণ ভাইটিকে জলাঞ্জলি দিলেন আপন স্বার্থেএতো গেল দেশের স্বার্থের নাম করে ঘুম ভাঙানো বা চিরঘুমে বিলীন করে দেওয়ামানুষ তো মরণ ঘুমে আজ জেগে ঘুমোচ্ছেঅজ্ঞানতার ঘুম; জীবনের সর্বক্ষেত্রে। মৃত্যুও তাই মানবজীবনে কুম্ভকর্ণের মৃত্যুর মতই অনিবার্য।

         
কুম্ভকর্ণ রাবণ অনুজ। বাল্মীকির বর্ণনায় পাই, "দশগ্রীবের পর মহাবল কুম্ভকর্ণ জন্মগ্রহণ করে। পৃথিবীতে ইহার তুল্য কাহারই দেহ সুদীর্ঘ নয়। (ভারবি সংস্করণ/পৃ:৮২০)। বাল্মিকী বর্ণিত কুম্ভকর্ণ কে একবার জেনে নেব কারণ তাতে বক্তব্য প্রতিপাদনের সুবিধা হবে। বর্ণনা::
          "ধনুশতপরিণাহঃ স ষট্শত মুচ্ছ্রিত।
          রৌদ্রঃশকট চক্রোক্ষো মহাপর্বত সন্নিভঃ
         ,,,দ্বগ্ধ শৈলোপমো মহান্।
           নীলাজ্ঞন চয়াকার;
           সতোয়াম্বুদ সঙ্কাশং কাঞ্চনাঙ্গদ ভূষণম্।
           কিরীটিনং মহাকায়্ম।
           কিরীটি হরিলোচনঃ
           সবিদ্যুৎ ইব তোরদঃ।"
     
গাড়ির চাকার মতো চোখ। মহাপর্বত তুল্য দেহ এবং তার বেড় হলো একশতধনু (১ধনু=৪হাত; ১০০ধনু×৪=৪০০হাত)। উচ্চতা  ছয়শত ধনু অর্থাৎ ৬৪০×৪=২৪০০ হাত। কৃষ্ণবর্ণ কজ্জলি পর্বতের মত দেহ অর্থাৎ গাত্রবর্ণ কালো এবং সজল মেঘের মতো তা শোভা পেত। মাথায় মুকুট ও বাহুতে কাঞ্চন অঙ্গদ রয়েছে। চোখদুটি পিঙ্গলবর্ণ। বিদ্যুৎছটায় উচকিত মেঘের বর্ণের মতো। কোমরটি ছিল ভীষণ চওড়া। সেই কৃষ্ণ স্থূলতাকে দেখে মনে হত সর্পবেষ্টিত মন্দির (রামায়ণের চরিত্রাবলী/সুখময় ভট্টাচার্য) এমন বিরাটাকার মানুষ হয় নাকি?  তবে যদি তা না হয় তাহলে সে ওইরকম ঘুম ঘুমায় কি করে? অতএব মানতেই হবে অতিমানবিক শক্তির অধিকারী ছিলেন কুম্ভকর্ণ। এ প্রবন্ধের প্রতিপাদ্য বিষয় ঘুম। এবং কুম্ভকর্ণের ঘুম আলোচ্য। কল্পনা, সত্য, বাস্তব, দর্শন, ধর্ম- যেভাবেই হোক না কেন এ' ঘুমে'র ব্যাখ্যা পেতেই হবে।
        
কুম্ভকর্ণ উত্তরাঞ্চলের মুনি ও দক্ষিণাঞ্চলের একজন মানবীর সন্তান। অসাধারণ এক মানবপুত্র। বাগ্মী, কর্মতৎপর ও ক্ষিপ্র। অসাধারণ প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব সম্পন্ন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে সঠিক ও তৎপর। অসামান্য রাজনৈতিক রাষ্ট্রনৈতিক প্রজ্ঞাসম্পন্ন ব্যক্তিত্বও বটে। তবে তাঁকে ছয় মাসে একবার মাত্র জাগানোর অর্থ কি? অগ্ৰজ রাবণের সঙ্গে ব্যক্তিত্ব, কর্তৃত্ব ও রাজনৈতিক সংঘাত থেকে escape করা মাত্র? ঘুম কি কুম্ভকর্ণকে escapist করেছিল? এমন অবস্থা হলে প্রাজ্ঞজন আজও তাই বলবেন বলে মনে হয়তাহলে এখানে কুম্ভকর্ণকে প্রাজ্ঞ বলে মেনে নিতে হলো শুধু "ঘুম "এর নিরিখে।
        
এখন প্রশ্ন এই যে, এই দীর্ঘ 'ঘুম' কি সাধক জনের কুম্ভক অবস্থা? এজন্যই কি তাঁর নাম কুম্ভকর্ণ? কুম্ভ অর্থাৎ কলসীর মতো কান আছে এমন। এক অতিরঞ্জিত ঘুমকাতুরে মানুষ করে কেন তাকে আঁকতে হল, এ প্রশ্ন থেকেই যাবে। এই ঘুমের জন্য, বস্তুতঃ স্ত্রী, সন্তান, প্রেম, মায়া আর সবকিছুই তাঁকে ছাড়তে হল। এমন একটা comic গল্প কেন তৈরি হল?
      
রাবণের মাতামহের রাজ্য হল লঙ্কা। লঙ্কা উদ্ধারের জন্য গোকর্ণ আশ্রমে থেকে যুদ্ধের কিছু কলাকৌশল আয়ত্ত করতে শুরু করলেন রাবণ সহ অন্য ভ্রাতারা। কুবেরকে বিতাড়িত করলেন রাবণ ও নিজে লঙ্কাধিপতি হলেন। এই পর্যন্ত স্ত্রী-পুত্রসহ কুম্ভকর্ণের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। এইটুকু অংশে ইনি রক্তমাংসের কুম্ভকর্ণবাকি বর্ণনা একটি অতিকায় শক্তিসম্পন্ন দানবের বর্ণনা। রাবণের আদেশে, বিরাট এক রাক্ষস দল নিদ্রিত কুম্ভকর্ণের কাছে উপস্থিত হলসেই বর্ণনায় পাই:

"কুম্ভকর্ণের গুহা অতিরমনীয় এবং চতুর্দিকে এক যোজন বিস্তৃত। ঐ গুহার কুট্টিমতল কাঞ্চনময়। মহাবীর কুম্ভকর্ণ বিকৃতভাবে প্রসারিত পর্বতের ন্যায় (পূর্বের হিসাব ২৪০০ হাত লম্বা, ৪০০ হাত চওড়াফুট হিসেবে- দৈর্ঘ্য প্রস্থে ৩৬০০ফুট, ও ৬০০ফুট) শয়াণ ও নিদ্রিত আছে"।।    

এত বড় রাক্ষস বা দানব কল্পনা তো রূপকথাতেও পাওয়া যাবে নাতবে এ কি বস্ত? প্রাগৈতিহাসিক গরিলার ও সহস্র লক্ষ-কোটি, অর্বুদ, খর্ব, নিখর্ব গুণ বড়? রাবণ, কুবের (কুবের, পিতা বিশ্রবার পুত্র) বিভীষণ-- কারো বর্ণনাই এমন বিকট কিম্ভূতকিমাকার নয়। ভাবলে হাড় হিম হয়ে যায়!!
         
এমন মানবপুত্রের ঘুমিয়ে কাটানোই মানুষের পক্ষে মঙ্গলেরএরপর আরো বর্ণনা আছে; "শরীরলোম ঊর্ধ্বে উত্থিত, ভূজঙ্গের ন্যায় দীর্ঘশ্বাস....তাহার নাসাপুট অতিভীষণ...আস্যকুহর
(মুখমণ্ডল) পাতাল সদৃশ। ... সর্বাঙ্গে মেদ ও শোণিতের গন্ধ,,, উজ্জ্বল কিরীটে সূর্যজ্যোতি"----এ অপার্থিব বর্ণনা কোনো মানব পুত্রের হতে পারে? তাহলে কি অমিত আন্তরশক্তি সম্পন্ন মানব ছিলেন তিনি? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজবো, না হলে "ঘুম"এর কোন তাৎপর্য পাওয়া যাবে না।

কুম্ভকর্ণ সাধক ছিলেন, তিনি মুনিপুত্র অতএব হঠযোগ জানা সম্ভব ছিল তার পক্ষে। যদি ধরে নিই তিনি "কুম্ভক" যোগটি অতিমাত্রায় আয়ত্ত করেছিলেন, তবে এই নিদ্রার একটা হিল্লে হয়,একটা বর্ণনা বা ব্যাখার সুযোগ পাওয়া যাবে। "কুন্তক" হল বায়ু নিরোধ-অবস্থা। শ্বাস-প্রশ্বাস কুম্ভকেই জন্মাচ্ছে আবার কুম্ভকেই লয় হচ্ছে। অধ্যাত্ম দর্শন বলে কুম্ভকই বিষ্ণুস্থিতি। কুম্ভকর্ণ নামটির সঙ্গে কুম্ভক যোগের সাদৃশ্য আছে। এ থেকেই কুম্ভকর্ণ নামটি প্রযুক্ত হয়েছে রাবণানুজে, এমনও ভাবা যেতে পারে। সাধকরা দীর্ঘকুম্ভকে থাকতে পারেন। সেই মহামৃত্যু মহাজীবনের সংযোগস্থল কুম্ভকে ব্রহ্মবিস্তার ও শান্তি লাভ হয়সাধক সমাধি থেকে মাটিতে নামতে চান না। হতে পারে কুম্ভকর্ণ তেমনিই এক বিরাট মাপের সাধক পুরুষ ছিলেন। চরিত্র রচয়িতা বাল্মীকির ওই expansion আঁকতে গিয়ে চরিত্রটিকে রঙে রেখায় শব্দে অতিমানুষ করে ফেলেছেন। এ চরিত্রের comic দিকটি চরিত্রকে অবনমিত করেছে। 'ঘুম' ---যা নাকি সাধক কুম্ভকর্ণের মানসিক ও আধ্যাত্মিক ঐশ্বর্য্যের দিক তাকে হাস্যকর করা হয়েছে। মনে হয় কুম্ভকর্ণ এমন এক বিশাল ও বিরাট অস্তিত্ব ছিলেন যাঁকে বাস্তব চিত্রপটে আঁকা যেত নাআসলে শ্রেষ্ঠত্ব ও বীরত্বের পটভূমিতে কুম্ভকর্ণকে বসাতে গিয়ে বাল্মিকী মোটা কালির আঁচড় কেটেছেন। হয়তোবা তখন এমনটাই প্রয়োজন ছিল।

এর পাশাপাশি কুম্ভকর্ণের আর একটি ব্যাখ্যাও কেউ কেউ দিয়েছেনকুম্ভকর্ণের মানবিক ব্যাখ্যা। সেইখানে কুম্ভকর্ণ এপিসোড শেষ, যেখানে তাঁর কুম্ভ, নিকুম্ভ নামে দুটি সন্তান হয়েছে। এরপরের ঘুমকাতুরে কুম্ভকর্ণের অন্য ব্যাখ্যা পাই। ঘুম এক ধরণের প্রাকৃতিক মৃত্যু। নিত্য ঘটে। তাহলে কুম্ভকর্ণ  ছয়মাস মৃত ও ছয়মাস জীবিত থাকেন? অসময়ে ঘুম ভাঙ্গানোর তাৎপর্য কি? ঘুমে এই সময়টি বা নির্দিষ্ট হল কেন? এসব প্রশ্ন সামনে আসবেইকোন মানবীয় ব্যাখ্যায় তখন এর উত্তর মিলবে না।

চলুন, অন্যত্র তার সন্ধান করি। যাই তাঁর পিতা বিশ্রবার কাছে। বিশ্রবা মুনি (উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দা) ছিলেন তিনি ছিলেন ব্রহ্মার স্নেহধন্য। তিনি প্রয়োজনে লোকক্ষয় করতে একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন, যেটি বিভীষণের মতে, (তেমনটাই শ্রী রামচন্দ্র কে তিনি বলেছেন) একমাত্র কুম্ভকর্ণ চালনা করতে পারতেন (হিগস বোসন কণার নামকরণের মতো) এখানে আবিস্কার ও আবিস্কর্তা  কি তবে এক হয়েছে? অথবা শ্রীকৃষ্ণের বিমানচালক গড়ুরের নাম অনুযায়ী "গড়ুর-রথ" হয়েছে যেমন, তেমটাই ওই অতিকায় মানব নিধন যন্ত্রটির নাম ও চালক কুম্ভকর্ণের সঙ্গে মিশে গেছে। যেতেই তো পারে।
     
বিশ্রবামুনি কুবেরের পিতা ছিলেনদেবপ্রেরিত হয়ে কুবের লঙ্কা শাসনে আসেন ও তাকে সাহায্য করতে বিশ্রবাও সেখানে আসেন। উদ্দেশ্য লঙ্কায় দেব-আধিপত্য বিস্তার করাকিন্তু বিশ্রবা রাজচ্যুত রাক্ষস রাজকন্যাদের প্রেমে মজে রইলেনতাদের বিয়ে করে লঙ্কাতেই সংসার পাতলেনএকাধিক রাক্ষস কন্যার গর্ভে তার পাঁচটি পুত্র-কন্যা জন্মালো। এদের সঙ্গে কুবেরের কোনো সংযোগ ঘটাবার চেষ্টা বিশ্রবা করলেন না। উপরন্তু রাক্ষসদের শক্তি বৃদ্ধি করতে ওই বিকট মারণযন্ত্রদানবটি তিনি যুদ্ধযান হিসেবে নির্মাণ করলেনকুবেরের কোষাগার থেকেই নাকি এ অর্থ এসেছিলকুম্ভকর্ণ জ্ঞানী, তীক্ষ্ণ, মেধাসম্পন্ন যোগী সাধক পুরুষ ছিলেন, তার সঙ্গে ছিল রাক্ষসসুলভ শারীরিক শক্তি ও তীক্ষ্ণ প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব (ইঞ্জিনিয়ার?) এই যন্ত্রটি ব্যবহারের কৌশলটিও তিনি শিখে নিলেন চটপট। এই যন্ত্রযানই রামের ওই সংগৃহীত বিপুলবাহিনীকে পর্যুদস্ত করতে পারবে ভেবেই রাবণ কুম্ভকর্ণের অকালে ঘুমটি ভাঙালেন। এতে ভায়ের মৃত্যু অনিবার্য জেনেও। বাধ সাধলেন বিভীষণ। তিনি রামচন্দ্রকে এসব বলে দিলেন (বিশ্বাসঘাতকতার এটি অনুক্ত ইতিহাস)।
       
কুম্ভকর্ণের বর্ণনা থেকে (বাল্মিকী প্রদত্ত ) আরো কিছু শব্দ চয়ন করা যেতে পারে। জলদবৎ গম্ভীর গর্জন- চীৎকার পূর্বক অঙ্গচালনা -রাক্ষসগণের মুশল ও গদাপ্রহর (hammering)-- প্রবল নিশ্বাসবেগ (staring/ ধোঁয়া ছাড়া?) কলসভর্তি মদ্যপান (মেশিনে জল দেওয়া?)- এগুলো দেখে ও তার আকৃতি দেখে একটি যন্ত্র দানবকে পুনরায় চালু করার কথাই সত্য বলে মনে হয়

আসলে বাল্মীকির বর্ণনা তখন একটা cosmic ব্যাপ্তি পেয়ে গিয়েছিল, কাজেই মানুষ কুম্ভকর্ণের চাইতে বীররস সিঞ্চনে যন্ত্র কুম্ভকর্ণেরই উপস্থাপনা কাহিনীকে epical garndour দেবে বলে মহাকবির মনে হয়েছিল--এমনটা ভাবা খুব ভুল হবেনা। তাই ওই নিদ্রিত অর্থাৎ অব্যবহৃত যন্ত্রদানবটিকে অকালে তোড়জোড় করেই সারাতে হলো। কিন্তু তার একটা নির্দিষ্ট সময় প্রয়োজন ছিল,একটা perticuar procedure দরকার ছিলযুদ্ধের আশু প্রয়োজনে যন্ত্রটিকে ব্যবহার করতে গিয়ে সেটি সর্বাধিক বিপর্যস্ত হল ও ভেঙে পড়লএই হল অকালে কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙানো এবং তার মৃত্যুর প্রতীকময় ইতিহাস। ওই যন্ত্রটি এখানে personified হয়েছে। কুম্ভকর্ণ যন্ত্রটি বিফল হলে রাবণ ভেঙে পড়েন অর্থাৎ ওইটি ছিল লঙ্কার একমাত্র ও সর্বশেষ ভরসা। মনে করা নিতান্ত অসঙ্গত হবে না,এবং কেউ কেউ এমনটাই ভেবেছেন, যে রাবণ এক অকল্পনীয় শক্তি নিয়ে সাম্রাজ্যবাদী আর্য শক্তিকে আঘাত হানার ছক কষেছিলেনসীতাহরণ সেই ইন্ধনে অগ্নিশলাকা মাত্র। এমন হওয়া অসম্ভব নয় যে যন্ত্র কুম্ভকর্ণের সঙ্গেই ভ্রাতা কুম্ভকর্ণও নিহত হয়েছিলেন

একটি জায়গায় এমন বর্ণনা পাওয়া যায়-" তাহার মুখ হইতে অঙ্গার মিশ্রিত অগ্নিশিখা উদগার হইতে লাগিল "--এ বর্ণনা প্রমাণ করে যে এটি যন্ত্রদানব কুম্ভকর্ণ ছিল। যন্ত্র বলেই সামনে যে পড়েছে তাকেই গ্রাস করেছে। কুম্ভকর্ণের রহস‍্য ইতিমধ্যে জেনে গেছেন রাম। তিনি এবার ব‍্যবহার করলেন "বায়ব‍্য" অস্ত্র। এদিয়ে বাতাসের গতি বাড়িয়ে দেয়া যায়। বাণ নিক্ষেপ করলেন রাম----প্রচণ্ড বিস্ফোরণ --স্থান উত্তপ্ত ও বায়ুশূন্য-- শূন্যস্থান পূরণের জন্য ভয়ানক ঝড় --সেই ঝড়ের শক্তির মুখে কুম্ভকর্ণ যানটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়--সেটিই রামের বায়ব‍্য বাণ নিক্ষেপের পরিণতি।

সেটি কি বাণ? কি অস্ত্র? পরমাণু শক্তি জাত কিছু? কুম্ভকর্ণ-যন্ত্রটির Brain তখনো চলছে-- চলছে দাপাদাপি-- "আমি বিরাধ নহি (আর একটি যন্ত্র ) খর ও কবন্ধ নহি'_ অর্থাৎ ইঞ্জিন তখনও চলছিল,- রাম মাথা কেটে ফেললেন Brain deathইঞ্জিন স্তব্ধ।

কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙ্গা, ঘুমানো, ধ্যানীর অতিশক্তি হতে পারে আবার যান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে সংযোজিত মানব কুম্ভকর্ণের একত্রীকরণের ইতিহাস ও হতে পারে  আমরা আসলে" ঘুম" নিয়ে ভাবতে বসে, কুম্ভকর্ণকেই হাতের কাছে পেলামভাবনার পালে হাওয়া লাগাল। যতদূর ভাসা যায় ভাসলাম সত্য ও কল্পনার পানসীতে। তবে কোন কল্পনাই সত্য ব্যাতিরেকে তৈরি হয়নি বলেই প্রবন্ধটি এভাবে লেখা গেল। বিদেশী সাহিত্যে রিপ ভ্যান উইঙ্কিলের দীর্ঘঘুমের কথা পাই। সে এক অন্য ইতিহাস। আলোচনার অপেক্ষায় রইলাম।             
                                        
কপিরাইট পারমিতা ভৌমিক কর্তৃক সংরক্ষিত

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন