মুখোমুখি অনিন্দিতা বসু সান্যাল
সম্পাদক: সকলের আগে ত্রৈমাসিক
রংরুটের পক্ষ থেকে আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। রংরুটের এই বিশেষ সংখ্যায় আপনাকে স্বাগতম। প্রথমেই
যে বিষয়টি জানতে চাইবো সেটি হলো, সাহিত্যই বা কেন? অর্থাৎ সাহিত্য ছাড়া আরও তো অনেক
বিষয় রয়েছে। সেখানে সাহিত্য নিয়ে আপনার আগ্রহের উৎস কি? এবং মোটামুটি ভাবে জীবনের কোন
পর্যায় থেকে সাহিত্য বিষয়ে এই আগ্রহের সূত্রপাত। এবং এই বিষয়ে বিশেষ কারুর প্রভাব যদি
থেকে থাকে আপনার জীবনে।
অনিন্দিতা বসু সান্যালঃ আপনাদেরও
অনেক ধন্যবাদ।...প্রশ্নটার উত্তর কীভাবে দেব জানি না। দেখুন, ‘সহিত’
কথাটি থেকে ‘সাহিত্য’ কথার উৎপত্তি। ‘সহিত’ মানে জীবনের সহিত বা জীবনের সঙ্গে।
সেইদিক থেকে সব কিছুই সাহিত্য, বা এই বিশ্ব সাহিত্যময়। কেবল কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক
প্রভৃতি নয় – অন্য সব বিষয়েই যা কিছু লেখা, আলোচনা –
তা সাহিত্য হিসেবেই গণ্য হয়। যেমন, বৈদিক
সাহিত্য। সাহিত্য অর্থে লিটারেচার কথাটার ব্যাপ্তি আরও বেশি। গবেষণার কাজে নিযুক্ত
লোকজনদের কাজ শুরু করার আগে ওই বিষয়ে ‘সাহিত্য’ (লিটারেচার) সমীক্ষা করতেই হয়। ...
আর যদি,
কেবল কবিতা, গল্প, উপন্যাস
অর্থে সাহিত্য বুঝি, তার শুরু শুধু আমার কেন, আমাদের
সবারই ঠিক কবে,
বলা মুশকিল। হয়তো শিশু বয়সে শোনা মায়ের ‘ঘুমপাড়ানি’ গানের
মধ্য দিয়ে।... সেটার আকর্ষণ দিনে দিনে বেড়েছে, বিশেষ করে
আমার – কারণ,
অতি অল্প বয়স থেকেই গানের ভিতর দিয়েই আমার বেড়ে ওঠা – আরও
স্পষ্ট করে বললে, রবীন্দ্রনাথের গানের ভিতর দিয়ে। তাই, তাঁর
লেখা ‘গানের ভিতর দিয়েই’ আমার জগতের অনেক কিছু চেনা, জানা, বোঝা।
তার গানের সূত্রেই সঙ্গীতগুরু শৈলজারঞ্জন মজুমদার বা মেনকা ঠাকুরের মতো
ব্যক্তিত্বদের সংস্পর্শে আসি।... ম্যাথিউ
আর্নল্ডের মতো অনেকে বলেন, সাহিত্য জীবন দর্পণ – আমার কাছে, সেই
‘জীবন’টাও অনেকখানি সাহিত্য দিয়েই চেনা।
সম্পাদক: এবারে আসি প্রথম লেখার
বিষয়ে। লেখালেখির ভিতরে যে অপার আনন্দ, সেই আনন্দের প্রথম অভিজ্ঞতা কেমন ছিল আপনার?
একটু বিস্তারিত ভাবে বলেন যদি।
অনিন্দিতা
বসু সান্যালঃ আগেই বললাম, রবীন্দ্রনাথ প্রথম ভালবাসা। এই
ভালবাসায় পড়ে যুক্ত হয়েছেন বঙ্কিমচন্দ্র থেকে মধুসূদন, বুদ্ধদেব বসু থেকে জীবনানন্দ।
আমাদের প্রথম কৈশোরটি ‘কৃত্তিবাসী’দের দখলে ছিল – ফলে, সুনীল, শক্তি
সন্দীপন থেকে উৎপলকুমার বসু, সেখান থেকে কালীকৃষ্ণ গুহ – সবাই।
আমার সৌভাগ্য,
অত্যন্ত অল্প বয়স থেকে এই শেষোক্তদের অনেককে খুব কাছ থেকে
দেখার সুযোগ হয়েছে। ওঁদের অনেকে আমার গান শুনতে ভালবাসতেন।... ১৯৯০-এর দশকে
কলকাতার এই সাহিত্যিকদের অনেকে, সঙ্গে বেশ কিছু খ্যাতনামা
চিত্রশিল্পী,
অধ্যাপক/ভাবুক মিলে সপরিবার কলকাতার বাইরে দিন তিন-চারের
জন্য সপরিবার যাওয়া হত। সেখানে কোনও একটা ভাবনার সূত্র নিয়ে – নিবিড় আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক, সাহিত্যপাঠ, গান, নাচ
গল্প, পানভোজন
সব চলতো। ব্যাপারটার একটা পোশাকি নাম ছিল – ‘কলোকিয়াম’। এই ‘কলোকিয়াম’গুলির বিবরণ
সেইসময়কার বিখ্যাত চিন্তাভাবনার লিটিল ম্যাগাজিন, ‘যোগসূত্র’, ‘হাওয়া
৪৯’ প্রভৃতিতে ছাপা হয়েছে। হিরণ মিত্রের মতো আর্টিস্ট ছবিও একেছেন।... আমি এর আগে
নানা রকম ‘ছড়া’ লিখতাম। তা হল কি, একবার শঙ্করপুর গিয়ে ‘কলোকিয়াম’-এর
বেশ কিছু মানুষের ওপর ছড়ার প্রোফাইল
করলাম। তাঁর অনেকগুলি উৎপলদার ভাল লাগলো। ওঁর লেখা ভূমিকা আর হিরণদার আঁকা
স্কেচ নিয়ে প্রথম বই বেরোলো, ‘কলোকিয়াম কড়চা’ – এই নামে। সেটা
নানা গুণিজনের প্রশংসা পেল। আনন্দবাজার পত্রিকার ‘কলকাতার কড়চা’ও এই বইটা নিয়ে
লিখল। অনেকে বললেন, এর অনেকগুলোই ‘ছড়া’র বৃত্ত ছাড়িয়ে ‘কবিতা’ হয়ে উঠেছে।
তাঁদের উৎসাহেই পূর্ণোদ্যমে কবিতা রচনায় আত্মপ্রকাশ। ‘কলোকিয়াম কড়চার’ পর
পুরোদস্তুর কাব্যগ্রন্থ, ‘উঠে এসো সম্মোহন’। প্রচ্ছদ
করেছিলেন,
প্রখ্যাত শিল্প-সমালোচক, মনসিজ
মজুমদার।
সম্পাদক: ব্যক্তিগত জীবনে আপনার
বড়ো হয়ে ওঠা, লেখাপড়ার সাথে সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা কখনো কি কোন সমস্যার সৃষ্টি করেছিল?
বিশেষ করে পেশাগত জীবনে প্রবেশের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার পর্যায়ে?
অনিন্দিতা
বসু সান্যালঃ সমস্যাতো
হয়ইনি,
বরং একে অন্যের পরিপূরক হয়ে উঠেছিল। তার একটা বড় কারণ বোধহয়
স্কুলের পর তুলনামূলক ভাষাতত্ত্ব নিয়ে আমার পড়াশুনো। ক্লাশ হতো প্রেসিডেন্সি কলেজ
ও সংস্কৃত কলেজে। একদিকে যেমন ভাষাতত্ত্বে পুরোন আবেস্তান, পার্সিয়ান, গ্রিক-গথিক
শিখছি,
পাশাপাশি সংস্কৃত সাহিত্য, ভাস, ভবভূতি, কালিদাস, ভারবি
পড়ছি। প্রেসিডেন্সি কলেজে বাংলা ও দর্শন পড়ার সময়েও সাহিত্যপাঠ সহায়কই হয়েছে।...
পরে, সঙ্গীতচর্চা
যখন প্রায়-‘পেশা’, সেখানেও আমার সাহিত্যিক পঠনপাঠন আমার গানের অন্দরে প্রবেশ
করার চাবিকাঠি হয়ে উঠেছে।
সম্পাদক: সাহিত্যের প্রতি আপনার
এই ভালোবাসার প্রথম দিকে কোন ধরণের সাহিত্যের প্রতি আপনার অধিকতর আগ্রহ ছিল? অর্থাৎ
গল্প কবিতা উপন্যাস। নাটক প্রবন্ধ ইত্যাদি। এবং এই প্রথম পর্যায়ে কোন কোন লেখকের লেখা
আপনাকে বেশি করে টানতো?
অনিন্দিতা
বসু সান্যালঃ প্রথমে
গানের সূত্রে কবিতা। আর আমাদের মেয়েবেলায় নানা জায়গায় কবিতা আবৃত্তির চল ছিল। কিছু
‘কবিতা’ স্টকে রাখতে হতো। সঙ্গে গল্প ও উপন্যাস।... আধুনিক কবিতা পড়ার সূত্রপাত ও
প্রেম কলেজ স্ট্রিটের কলেজ জীবনে। তখন
কলকাতা বইমেলা কয়েক বছর শুরু হয়েছে। বইপাড়ার সঙ্গে বইমেলার স্টলে স্টলে ঘুরে কবিতার
বই কিনতাম। তখন বন্ধুদের জন্মদিনে কাব্যগ্রন্থ দেওয়ার চল ছিল। তখন পাঁচ টাকায় কেনা কত বই যে কত বন্ধুকে
দিয়েছি! পাঁচ টাকাতেই বুদ্ধদেব বসুর অমর
দুই কাব্যনাট্য ‘অনাম্নী অঙ্গনা ও প্রথম পার্থ’ কিনেছিলাম।... তবে সেইসময় আমরা
সবাই পঞ্চাশের দশকের কবিদের ‘ফ্যান’ – তার মধ্যেও দুটি প্রধান ক্যাম্প – শক্তি ও
সুনীলের। ব্যক্তিগতভাবে, আমি (এবং হয়তো অনেকেই) কবিতায়
শক্তি (আহা কীসব লাইন... “মেঘলা দিনে দুপুরবেলা যেই পড়েছে মনে চিরকালীন ভালবসার
বাঘ বেরুলো বনে...”!) আর উপন্যাসে সুনীল।
সম্পাদক: আপনার নিজের লেখার বিষয়ে,
কোন বিশেষ লেখকের প্রভাব সম্বন্ধে আপনি কি সচেতন? যেমন, অনেকেই আমরা আমাদের খুব প্রিয়
লেখকের দ্বারা মনের অজান্তেই প্রভাবিত হয়ে পড়তে পারি। আবার অত্যন্ত সচেতন ভাবে প্রিয়তম
লেখকের প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার প্রয়াসও করতে পারি। আপনার নিজের লেখালেখির ক্ষেত্রে বিষয়টি ঠিক কি রকম?
অনিন্দিতা
বসু সান্যালঃ দেখুন, নিজের
পক্ষে এর উত্তর দেওয়া কঠিন, কোনও প্রকৃত সৃষ্টিশীল মানুষই
অনেকের দ্বারা শিক্ষিত/প্রভাবিত হলেও, নিজের মতোই সৃষ্টি করতে চায় –
সচেতন ভাবে কারও ‘ক্লোন’ হতে চায় না। তবুও অনেক সময় প্রভাব থেকে যায়। তা আবিষ্কার
করা সাহিত্য সমালোচকের কাজ – সাহিত্যিকের নয়।
সম্পাদক: লেখালেখির সাথে নিরন্তর
বই পড়ার একটা গভীর সংযোগ রয়েছে। বর্তমানের গতিময় জীবনে হয়তো সবসময় সেই সম্পর্ক অটুট
রাখা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তবুও এই সময়ে দাঁড়িয়ে আপনি কোন ধরণের বই পড়তে বেশি আগ্রহী।
এবং কোন কোন লেখক আপনাকে এই সময়ে বেশি করে কাছে টানেন তাঁদের লেখার গুণে।
অনিন্দিতা
বসু সান্যালঃ আমি
এমন একটা দিনের কথা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারিনা, যেদিন
মুদ্রিত কোনও বইয়ের পাতা উল্টোব না। দেখুন, আমি খবর ও
খুব বাছাই করা অনুষ্ঠান ছাড়া টিভি প্রায় দেখিই না। অতএব, প্রতিদিন
অন্য কাজের ফাঁকে কিছুটা গান ছাড়া, বাকি প্রায় ঘণ্টা তিনেক বই পড়া ও
লেখালিখি। আগে কবিতা ছাড়া গল্প-উপন্যাস অনেক বেশি টানত – শক্তি-সুনীল ছাড়া, উৎপলদা, কালীকৃষ্ণদার
কবিতা;
তিন বাঁড়ুজ্জ্যের লেখা ছাড়া, কমলকুমার
মজুমদারের বেশ কিছু গল্প (বিশেষত, ‘মল্লিকা বাহার’), সন্দীপনদা
(চট্টোপাধ্যায়),
রাঘবদা-র (বন্দ্যোপাধ্যায়) উপন্যাস, মণিভূষণ
ভট্টাচার্য-এর কাব্য, মনীন্দ্র গুপ্ত-এর কাব্য/গদ্য, আর কত
অশেষ নাম! নারায়ণ সান্যালের ‘অজন্তা
অপরূপা’-র কথাও বলতে হয়। এখন বেশ কিছুদিন প্রবন্ধ ও জীবনীভিত্তিক লেখায় আগ্রহ
জাগছে। সম্প্রতি পড়া চিন্ময় গুহের ‘ঘুমের দরজা ঠেলে’ বা নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের
(রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনভিত্তিক) ‘আপনি তুমি রইলে দূরে’ পড়ে মুগ্ধ হয়েছি।
সম্পাদক: আপনার নিজের লেখা কয়টি
ও কি কি বই প্রকাশিত হয়েছে যদি বলেন। এবং বইগুলির বিষয়বস্তু ও সেই সম্বন্ধে আপনার ভালোলাগা
তৃপ্তির দিকগুলিকে আমাদের পাঠকের সামনে একটি যদি বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরেণ।
অনিন্দিতা
বসু সান্যালঃ প্রকাশিত
কাব্যগ্রন্থ (‘কলোকিয়াম কড়চা’ সহ) বাকি বইগুলিঃ উঠে এসো সম্মোহন, যখন
জমেছে মেঘ,
ঋতুসুন্দর, হলুদ ছোপের চিঠি, তোর
মেয়েবেলা,
বাইপাসে সাইকেল লেন চাই ও বাঁশির অধরা ইন্ধন। এছাড়া
সহ-সম্পাদনা,
‘দামিনী’ (৬০০ বছরের বাঙালি মেয়েদের কাব্য সংকলন।) নিজের
কবিতা বিষয়ে কবিকে লিখতে বলা বিড়ম্বনা বই কিছু নয়। তবে, আমি
মেয়েদের নিয়ে,
তাদের অস্তিত্ব, আবেগ, ভালবাসা, ঠকে
যাওয়া – এইসব নিয়ে নানাভাবে লিখেছি, বা লিখতে চেয়েছি। ‘ঋতুসুন্দর’-এর
বেশ কিছু কবিতা প্রয়াত পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষকে নিয়ে লেখা। ‘তোর মেয়েবেলা’র বেশ
কয়েকটা মহাভারতের মেয়েদের নিয়ে। আর ‘বাইপাসে সাইকেল লেন চাই’ বাইপাসে নিহত দুই
সাইকেল আরোহীদের প্রতি উৎসর্গীকৃত। এই করোনার আবহে যদিও এখন অনেকেই কলকাতায়
‘সাইকেল লেন’ চাইছেন! যদি ‘রংরুট’-এর পাঠকরা আমার কবিতার দু’একটিও সংগ্রহ করে পড়েন, তবে
খুব ভাল লাগবে।
সম্পাদক: বর্তমান সময়ে একটি বই
প্রকাশ করতে গিয়ে একজন লেখককে সাধারণত কি কি ধরণের সমস্যায় পড়তে হয়। আপনার ব্যক্তিগত
অভিজ্ঞতা থেকে এই বিষয়ে যদি আলোকপাত করেন।
অনিন্দিতা
বসু সান্যালঃ সমস্যা
একটাই। আগে ছিল ‘হাজারে হাজারে’ কবি, এখন ততোধিক প্রকাশক। কিন্তু প্রকাশ
পেলে প্রচার আর বিক্রির দায়ভার বেশির ভাগ নব্য প্রকাশক লেখকের ওপরেই চাপাতে পছন্দ
করে থাকেন!
সম্পাদক: আপনার নিজের লেখার বিষয়ে
কখনো কি মনে হয়েছে, একটি গণ্ডীর ভিতরেই আটকিয়ে যাচ্ছে আপনার যাবতীয় লেখালেখি। সাধারণত
আমাদের অধিকাংশই কিন্তু একটা পর্যায়ে এসে আত্মনির্মিত নিজস্ব গন্ডীর ভিতরেই আটকিয়ে
যাই। অনেকেই হয়তো খেয়াল করি না। আবার অনেকেই হয়তো সচেতন ভাবে সেই গণ্ডীর ভিতর থেকে
নিজেকে মুক্ত করতে প্রয়াসী হন। আপনার লেখালেখি ও আপনার ব্যক্তিগত উপলব্ধি থেকে এই বিষয়ে
বিস্তারিত আলোকপাত যদি করেন।
অনিন্দিতা
বসু সান্যালঃ হয়তো
তাই, আমার
ক্ষেত্রেও। নিজে বলতে পারব না। তবে মাঝে মাঝেই কবীর সুমনের গানের ভাষায় বলি –
‘...সীমানা পেরোতে চাই’।
সম্পাদক: সবশেষে জানতে চাইবো,
বর্তমান সমাজ সভ্যতায় দাঁড়িয়ে আজকের বাংলা সাহিত্যের বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন। এবং বাংলা
সাহিত্যের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে আপনি কতটা আশাবাদী ও কেন?
অনিন্দিতা বসু সান্যালঃ বাংলাদেশে
জাতীয় ভাষা হলেও এখানে বাংলা তো অনেকের চোখেই ‘রিজিওনাল’ ভাষা। ফলে, ‘বাজার’
ছোট, লেখককুল
ক্রমবর্ধমান। মুশকিল হল, বড় শহরে আমাদের ছেলেমেয়েরা অনেকেই
ইংরেজি মাধ্যমে লেখাপড়া করায় সাহিত্যিক বাংলার পাঠক সংখ্যা কমছে। যদিও, শহরতলী
বা জেলা শহরগুলি থেকে প্রকাশিত কবিতা ও লিটিল ম্যাগাজিনের মান কিন্তু অসম্ভব ভাল।
এঁরা এই পোস্টমডার্ন সময়ে বসে বাংলা ভাষায় নানা রকম পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন। জেলার
মাটিতে দাঁড়িয়ে আন্তর্জাতিক আকাশ ছুঁতে চাইছেন। বয়সে এঁদের অনেকে আমার কনিষ্ঠ হলেও
এঁদের আমি শ্রদ্ধা করি। এঁদের ওপর ভরসা রাখি।
অনিন্দিতা বসু সান্যালের জন্ম কলকাতায় (৬ সেপ্টেম্বর,১৯৬২)। পড়াশুনোর বিষয় ভাষাতত্ত্ব। ভালবাসার ভুবন রবীন্দ্রসঙ্গীত ও বাংলা
কাব্য। আনুষ্ঠানিক শিক্ষাঃ ব্রাহ্ম বালিকা শিক্ষালয়,
টাকি হাউস স্কুল ফর
গার্লস, সংস্কৃত ও প্রেসিডেন্সি কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। সঙ্গীত শিক্ষাঃ গীতবিতান
(উত্তর), মেনকা ঠাকুর, শৈলজারঞ্জন মজুমদার,
এণাক্ষী চট্টোপাধ্যায়, প্রফুল্লকুমার দাস ও ধ্রুপদ-ধামার শিক্ষাঃ ইতু বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকাশিত
রবীন্দ্রসঙ্গীতের সিডিঃ ‘জ্বলিছে ধ্রুবতারা’। কলকাতার বিধাননগরে তার জীবনসঙ্গী
শিবাজীপ্রতিম বসু ও কন্যা মাধুরীলতার সঙ্গে থাকেন। অবসরে দেশভ্রমণ ও বাগানচর্চা।
পৃথিবীকে পরিবেশবান্ধব ও সংবেদী বন্ধুদের ‘আড্ডাস্থল’ ভাবতে ভালবাসেন।
কপিরাইট রংরুট কর্তৃক সংরক্ষিত
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন