এই সামারের শেষের দিকেও দেখা যায় মেয়েরা শর্ট, স্লিপলেস, টিউপ্টপ,টেনটপ, হলটার, স্ক্রাপ্ট পড়ে দিব্যি রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছে কেউ ফিরেও
কৌতূহল বশত তাকায় না। এটাই তো নারীর পোশাকের স্বাধীনতা। যদি কেউ নারীর শারীরিক
সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয় ভদ্র ভাবে বলবে you look beautiful. এর বেশি কিছু নয়। এতে মেয়েটি খেপে যায় না। বরং খুশি হয়। কিন্তু আমাদের সমাজ? সেখানে কি চলছে? নারী কি পোশাক পড়বে আর কি পোশাক পড়বে না তা নির্ধারণ করে দেবে পুরুষ। তাহলে
নারীর কোন স্বাধীনতা থাকে? যে
সমাজে নারীর সব কিছু পুরুষ দ্বারা নির্ধারিত হয় সেই সমাজ পশ্চাৎপদ ও
পুরুষতান্ত্রিক সমাজ। আর সেখানে ধর্ষণের মাত্রাও বেশি। পুরুষ যৌন লালসা তখনি বেড়ে
যায় যখন নারীদের বন্দি করে রাখার চেষ্টা করা হয়। প্রাপ্ত বয়স্ক প্রতিটি মানুষের
যৌন স্বাধীনতা রয়েছে পুরুষের পাশাপাশি। কানাডার এই সমাজে নারীর শারীরিক সৌন্দর্য তা
তার পোশাক নির্বাচনের স্বাধীনতার মধ্য দিয়ে ভোগ করে।~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
নারীবাদ
ও স্বাধীনতা
রওশোন আরা বেহুম
আজ সারাদিন মেয়ের কেনাকাটার জন্য বাইরে ছিলাম। এই টরোন্টোতে ইয়ার্কডেল নামে
একটা বড় শপিং সেন্টার রয়েছে। সেখানে গেলেই চোখে পড়ে বড় বড় ব্রান্ডের সব দোকান।
ফ্যাশন সচেতন মেয়ের জন্য আমার সেখানে যাওয়া হয়। ছুটির দিনে এখানকার যুবক যুবতীদের
তীব্র ভিড় দেখা যায় সেখানে তবে মেয়েদের সংখ্যাই বেশি। এখানকার ইয়াং জেনারেশন খুব
ফ্যাশন সচেতন। ছেলেদের থেকে মেয়েরাই সবচেয়ে বেশি ডলার খরচ করে এই সব ফ্যাশনের
পিছনে। মেয়েদের এই চাহিদার সাথে সাথে এখানে গড়ে উঠেছে বড় বড় ডিজাইনারদের স্টোর যা
ব্রান্ড নামেই পরিচিত। এমন কি এখানে মেয়েদের ব্রা ও আন্ডারওয়ারের বিখ্যাত দোকান
ভিক্টোরিয়া সিক্রেট ও লাজাঞ্জা নামে দোকান আছে যেখানে ফ্যাশন সচেতন মেয়েদের ভিড়
দেখা যায়। তাছাড়া মেয়েদের ড্রেসেরও রয়েছে নানা ব্রান্ডের দোকান। যেমন Top shop, Nordstorm, Saks 5th avenue ইত্যাদি
বড় বড় ব্রান্ডের সব দোকান। এই সব দোকানে নানা ধরনের ফ্যাশন ডিজাইনারের পোশাক আশক
পাওয়া যায়। যেমন - Varsack, Chaneller, Dior, Balenciaga,
Alezander Wang, Meshichino ইত্যাদি নানা ডিজাইনারের নাম এই
সমাজে বিখ্যাত। আমি মনে মনে ভাবি আমার অনেক টাকা হলেও এই পিছনে কোন পয়সা খরচ করতে
রাজি নয় তবে মেয়ে কি তা শুনে? তার
পোশাকের স্বাধীনতা রয়েছে। অনেক দিন পরে হলেও ব্রান্ডের দু একটি জিনিস কিনে দেই।
এতে সে খুশি হয়। এই কানাডার মেয়েদের পোশাকের ডিজাইন গুলো দেখলে মনে হয় এখানকার
মেয়েদের শারীরিক সৌন্দর্য ফুটে তোলাই হলো এর লক্ষ্য। নারীর পোশাকের স্বাধীনতা এই
সমাজে সম্পূর্ণ ভাবে রক্ষিত। যেমন একটা মেয়ের শারীরিক অবয় যে পোশাকে যত বেশি ফুটে
উঠবে যেই পোশাকের চাহিদা ততো বেশি। আমরা পোশাক পড়ি বেশি করে শরীর ঢাকার জন্য
সৌন্দর্যের জন্য নয়। যেমন আমি বাংলাদেশে গিয়ে দেখি মেয়েদের মধ্যে শাড়ির চাহিদা কমে
গেছে। সেখানে জায়গা করে নিয়েছে সালোয়ার কামিজ আর হেজাব। আমার নিজের বোনের কাছেই
জানতে পারলাম যে শাড়িতে নাকি মেয়েদের পেট দেখা যায় তাই সে শাড়ি পড়ে না। ধর্মের
কারণে আমাদের পোশাকআশাকের সংস্কৃতি পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। যেমন স্কুলের ছেলে
মেয়েদের মধ্যে এখন ধর্মীয় পোশাক দেখা যায়। মেয়েদের মাথায় হেজাব আর ছেলেদের মাথায়
ধর্মীয় টুপি দেখা যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নানা ধর্মের ছেলে মেয়েরা থাকে। সেখানে
কোন ধর্মীয় পোশাক বৈধ করা মানে ধর্মীয় বৈষম্যকে জিইয়ে রাখা।
এই সামারের শেষের দিকেও দেখা যায় মেয়েরা শর্ট, স্লিপলেস, টিউপ্টপ,টেনটপ, হলটার, স্ক্রাপ্ট পড়ে দিব্যি রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছে কেউ ফিরেও
কৌতূহল বশত তাকায় না। এটাই তো নারীর পোশাকের স্বাধীনতা। যদি কেউ নারীর শারীরিক
সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয় ভদ্র ভাবে বলবে you look beautiful. এর বেশি কিছু নয়। এতে মেয়েটি খেপে যায় না। বরং খুশি হয়। কিন্তু আমাদের সমাজ? সেখানে কি চলছে? নারী কি পোশাক পড়বে আর কি পোশাক পড়বে না তা নির্ধারণ করে দেবে পুরুষ। তাহলে
নারীর কোন স্বাধীনতা থাকে? যে
সমাজে নারীর সব কিছু পুরুষ দ্বারা নির্ধারিত হয় সেই সমাজ পশ্চাৎপদ ও
পুরুষতান্ত্রিক সমাজ। আর সেখানে ধর্ষণের মাত্রাও বেশি। পুরুষ যৌন লালসা তখনি বেড়ে
যায় যখন নারীদের বন্দি করে রাখার চেষ্টা করা হয়। প্রাপ্ত বয়স্ক প্রতিটি মানুষের
যৌন স্বাধীনতা রয়েছে পুরুষের পাশাপাশি। কানাডার এই সমাজে নারীর শারীরিক সৌন্দর্য
তা তার পোশাক নির্বাচনের স্বাধীনতার মধ্য দিয়ে ভোগ করে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীবাদ ও নারীর স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা করতে হলে ইতিহাসের
দিকে আমাদের তাকাতে হবে। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নারী স্বাধীনতার পক্ষে সবচেয়ে
বড় ভূমিকা পালন করে গিয়েছিলেন। তার হাত ধরেই বাংলার মুসলমান নারীরা প্রথম শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানে যাওয়া শুরু করে। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে শিক্ষাই হলো নারী স্বাধীনতার
প্রথম পদক্ষেপ। অনেক আগে নারীরা ঘরের বাইরেই বের হতে পারতো না। ধনী শিক্ষিত ঘরের
মেয়েরা ঘরে কিছু পড়াশুনা করার সুযোগ পেত। তাছাড়া সেই সময়ে মেয়েদের মধ্যে বাল্য
বিবাহের প্রচলন ছিল। অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার যে সামাজিক রীতি ছিল তা নারী
মুক্তির পথে একটা বিরাট বাধা। বেগম রোকেয়াও প্রথম তার বড় ভাই ইব্রাহিম সাবেরের কাছ
থেকে বাংলা ও ইংরেজি পাঠ শেখেন। তার ভাই ছিলেন আধুনিক মনস্ক। বেগম রোকেয়ার জ্ঞান
পিপাসা ছিল অসীম। রাত জেগে গভীর রাত পর্যন্ত ভাইয়ের সহায়তায় বাংলা ও ইংরেজি ভাল
করে শেখেন। ১৮৯৮ সালে ১৮ বছর বয়সে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ সাকাওয়াত হোসেনের
সাথে বেগম রোকেয়ার বিবাহ হয়। স্বামীও ছিলেন মুক্ত মনের মানুষ। তার উৎসাহে বেগম
রোকেয়া সাহিত্য চর্চা ও লেখা পড়া আরো বেগবান হয়। ১৯০৯ সালে সাকাওয়াত হোসেনের
মৃত্যুর পর বেগম রোকেয়া নারী শিক্ষার পিছনে কাজ শুরু করেন। এখানে আর একটি কথা না
বললেই নয় যে সাকাওয়াত হোসেন মেয়েদের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য টাকা জমিয়ে
রাখতেন। সেই টাকা দিয়েই বেগম রোকেয়া তার নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন ১৯১১
সালে। ১৯৩০ সালে সেটি হাই স্কুলে পরিণত হয়। স্কুল পরিচালনা ও সাহিত্য চর্চার
পাশাপাশি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নিজেকে সাংগঠনিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত
রাখেন।
বেগম রোকেয়ার সম্পর্কে আজ এই কথাগুলো কেন বলতে হচ্ছে তার পিছনে কারণ রয়েছে।
তিনি নারী মুক্তির পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান রাখতে পেরেছিলেন পুরুষকে বাদ দিয়ে নয়।
নিজের বড় ভাই ও পরে তার স্বামীর সহায়তায় তার যে ভিত্তি গড়ে উঠেছিল তা তাকেই অনেকটা
পথ পাড়ি দিতে সহায়তা করে। আজকের নারীবাদীদের মধ্যে একটা ভিন্ন চিত্র দেখতে পাই।
এরা মনের মধ্যে পুরুষ বিদ্বেষী ভাব লালন পালন করে নারী মুক্তির আন্দোলন করতে এগিয়ে
নিয়ে যাচ্ছে। যে নারী স্বামীর দ্বারা নির্যাতিত হয়েছে তার পক্ষে পুরুষ বিদ্বেষী হওয়া
খুব স্বাভাবিক। আর এই পুরুষ বিদ্বেষী স্বাভাবিক মনোভাব রেখে কেউ যদি নারীবাদী হয়ে
নারী অধিকার আদায়ের জন্য সামনের কাতারে চলে যায় তা হবে অস্বাভাবিক। কারণ নারীবাদী
হতে গেলে নারী পুরুষের সমতায় বিশ্বাসী হতে হবে। পুরুষকে পায়ে পিষতে পারলেই যেন
আজকের যুগে বড় নারীবাদী হওয়া যায়। এই লক্ষণ গুলো আজ পরিষ্কার ফুটে উঠেছে। এটাই তো
আজ নারী মুক্তির পথে বড় বাঁধা। আমি নিজেই বাংলাদেশের কয়েক জন বিখ্যাত নারীবাদীর
সংস্পর্শে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল লেখালেখির ছলে। যে চিত্র আমি পেয়েছি তা এখানে
বর্ণনা করতে চাই না। আমি প্রবাসে দীর্ঘদিন কাটিয়েছি বলেই হয় তো আমার চোখে বাংলার
নারীবাদীদের অমানবিক আচরণ তীব্র প্রকট ভাবে ধরা পড়েছে। মানুষের সাথে স্বাভাবিক
সৌজন্য বোধটিও তারা আজ দেখাতে জানে না। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে যে এই সব
নারীবাদীরা সুযোগ মত যাতে তাকে যে কোন কাজে ব্যবহার করবে আবার দূরে ছুড়ে ফেলতেও
বিন্দু মাত্র সময় নেয় না। বাংলাদেশের অধিকাংশ নারীবাদীরা আজ সুযোগ সন্ধানীর
ভূমিকায় রয়েছে। মানবিক হয়ে উঠতে গেলে যে পরিবেশ দরকার সেই পরিবেশ হয় তো বাংলাদেশে
অনুপস্থিত। এই কারণেই হয়তো নারী পুরুষের মধ্যকার ব্যবধান বেড়েই চলছে। এঁকে অপরের
প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি যখন কোন পুরুষের লেখার প্রশংসা করি তখন এও বলতে
শুনেছি নারীবাদীদের কাছ থেকে আরে তুমি কেন তার প্রশংসা করছো, তুমি বরং তার থেকে অনেক ভাল লেখ। একজনের প্রতিভা দেখে যদি
আরেক জন মনে কষ্ট পায় তাহলে সেখানে একটা দ্বন্দ্ব সংঘাত তৈরি হবার সম্ভাবনা থেকে
যায়। নিষ্পেষিত ও নির্যাতিত মানুষ কোন মতবাদের উপর আশ্রয় করে বেঁচে থাকার চেষ্টা
করে। এই মানুষগুলোর সত্যিকার অর্থে কোন ক্ষমতায়ন ঘটেনি।তাই তাদের এই প্রতিবাদ হৈচৈ
গোলমাল হিসাবে পাশে ঠেলে রাখে। নারীবাদ এখন এমন এক সহায় সম্বলহীন দুবলা মতবাদ, অনন্ত আমাদের সমাজে। বিক্ষিপ্ত হয়ে দু-একজন পুরুষ নির্যাতিত
হয় নারীর দ্বারা, নিদেন
পক্ষে সেই পুরুষও এই অত্যাচারের কথা লোক সম্মুখে আনতে সংকুচিত হয়। এর কারণ কি?
মাসকিউলিনিটির এত বেশি ক্ষমতায়ন ঘটেছে যে একজন নির্যাতিত পুরুষও সেই ক্ষমতার
ইমেজকে ধরে রাখতে অবচেতন ভাবে কাজ করে যায়। এই ক্ষমতা তারা নারীদের সাথে ভাগাভাগি
করতে চায় না। এখন এই ক্ষমতার অংশীদার হলে বা এই ক্ষমতার বলয়ে থেকে আলাদা ভাবে
নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব নয় তা বার বার প্রমাণিত হয়েছে। আমার মনে হয় বিচ্ছিন্ন ভাবে
এই ক্ষমতা অর্জন একেবারেই অসম্ভব। বাংলাদেশের নারীবাদীদের মধ্যে দেখা গেছে অধিকাংশই
নারীই ডিভোর্স। স্বামী স্ত্রী দুজনেই মিলিত হয়ে কাজ করছে নারী অধিকার আদায়ের পিছনে
এরকম মানুষের সংখ্যা খুবই নগণ্য। আজকের এই নারীরাই তসলিমা নাসরিনের ভক্ত। অথচ
নারীবাদীদের বড় আইকন হওয়া উচিত ছিল বেগম রোকেয়া, বেগম সুফিয়া কামাল, জাহানারা
ইমাম। কিন্তু তা হতে পারেনি। নারী অধিকার আদায়ের পিছনে যাদের তেমন ভূমিকাই নেই
তারাই আজ কিছু নারীবাদীর কাছে আইকন হয়ে উঠেছে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে
মানুষ ভাবতে পারাই হলো বড় মানবিকতা। আর এই মানবিকতার যখন বিপর্যয় দেখা দেয় সেই
দুর্যোগ দূর করার জন্য যারা এগিয়ে আসে তারাই নারীবাদী। নারীবাদী বিচ্ছিন্ন কোন
বিষয় নয়। সমাজের সকল মানুষের অধিকার আদায়ের পিছনে নারীবাদীদের বড় ভূমিকা রয়েছে। আর
আমাদের সমাজে নারীরাই সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত। এই কারণে পুরুষদেরকেও আস্তে আস্তে
নারীবাদী হয়ে উঠতে হবে নারীদের সাথে নিজেদের স্বার্থেই এক কথায় সমগ্র মানব জাতির
স্বার্থে।
সংসার, পরিবার এইসবই অনৈয়মিক বা
ইনফর্মাল প্রতিষ্ঠান। খুব নিখুঁতভাবে, চুলচেরা হিসেব করে এখানে নারী পুরুষ যার যার আধিকার আদায় করতে গেলে সংসারের
পরিবেশটাই কেমন জানি হয়ে পড়ে। অনেক সময় সংসারের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই কঠিন হয়ে
পড়ে। তাই হয়তো গুণীরা বলেন- সংসার একটা সমঝোতার লম্বা দৌড় বা লং রেস অব
কম্প্রোমাইজ। উনবিংশ বা বিংশ শতাব্দীর নারীবাদীরা সংসারকে সাথে নিয়ে নারীদের
প্রতিনিধি হয়ে কথা বলেছেন। এখনকার নারীবাদীরা অধিকাংশ ক্ষত্রে তা পারেন না। হয়তো
তারা আগের চেয়ে বেশি অধিকার সচেতন বলে। জুতা আবিষ্কারের গল্পটা হয়তো সবার মনে আছে।
পাটাকে শুধু চামড়া দিয়ে মুড়ে দিতে পারলে আর ধূলিময় পৃথ্বীকে মুড়ে ফেলার দরকার নেই-
এই ছিল জুতা আবিষ্কারের পেছনের ইতিহাস। ঠিক সেইভাবে বলা যায়- নারী সম্পর্কে এই
সমাজ সংসারের স্টেরিওটাইপ ধারণাগুলোকে বদলে দিতে পারলেই আর সংসারের ভিতরে বাইরে যুদ্ধংদেহী
হবার দরকার নেই, আছে কি? কিভাবে বদলানো যাবে সেই ধারণা? নিশ্চয়ই
শিক্ষার মাধ্যমে। সেই শিক্ষানীতি প্রণয়নে নিশ্চয়ই নারীদের ভূমিকা থাকা বাঞ্ছনীয়।
তাই সেই নীতি নির্ধারকের আসনে বসতে হবে নারীকে। সেখানে বসার যোগ্যতা অর্জনের সময়
এসে গেছে তার। এটা করতে পারলে দুই এক প্রজন্মের ভিতরে সুফল ফলবে সন্দেহ নেই।
কিন্তু তা না করে যদি নারী নারীবাদকে সামনে রেখে যুদ্ধংদেহী মেজাজে
লিঙ্গসাম্প্রদায়ীকতাকে প্রণোদিত করে, তাহলে শেষ বিচারে তাদেরই পরাজয়। মনে রাখা জরুরী, নারীবাদ একটা নীরব বিপ্লবের নাম। এর মাধ্যমে কম্যুনিস্ট বিপ্লবের মত
তাৎক্ষণিকভাবে কোন কিছু অর্জন করা দুরূহ। তবে ঠিক লাইন মত বা প্রথাসিদ্ধভাবে শ্রম
ও মেধা দিয়ে কাজ করে গেলে নারীবান্ধব সমাজ, শিশুবান্ধব সমাজ, সর্বোপরি
মানববান্ধব সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, নারীবাদী আন্দোলন আজ এমন বেপথু যাত্রায় সামিল হয়েছে যে তা দ্বারা ভবিষ্যতে
নারীরা কী অর্জন করবে, তা
নিয়ে সন্দেহ রয়েছে প্রচুর।
রওশোন
আরা বেহুম