শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় ~ করোনাকাল ও সভ্যতার সংকট

 

করোনাকাল ও সভ্যতার সংকট

 

বৃহৎ এ মহাবিশ্বের সাথে পরিচয়ের জন্মলগ্ন থেকেই মানুষ প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল। প্রকৃতি থেকে সে কেবল নিয়েই চলেছে বিনিময়ে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছে বিশ্বপ্রকৃতিকে ধ্বংস করে। সমুদ্র নদীতে বর্জ্য, প্লাস্টিক ইত্যাদি ফেলে সামুদ্রিক প্রাণী নষ্ট করেছে গাছ কেটে গগনচুম্বী সভ্যতার নিদর্শন প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। জীবনকে জেটগতিতে ছুটিয়েছে প্রকৃতিকে নিঃস্ব করে। তখনও মানুষ জানতো না কি অপেক্ষা করে আছে অদূরে তাদের জন্য যা তার পূর্বের কোন পুরুষই দেখেনি।


পৃথিবীর পরিধি বরাবর হঠাৎ যেন কালো একটা পর্দা নেমে এলো। নীল আকাশটা কালো মেঘে ঢেকে গেল। যেন কুয়াশায় ভরে গেল চারপাশ! চেনা সবকিছুই অচেনা হয়ে গেল। বসন্ত বয়ে আনল সর্বনাশ। মানুষ এতো এতো উন্নত হয়েছে মহাকাশে রকেট পাঠিয়েছে মঙ্গল অভিযান করেছে চাঁদে নেমেছে সেই উন্নত মানুষের পথরোধ করে দাঁড়াল এক ছোট্টো ভাইরাস যা ডিসেম্বরের শেষে চীনের উহান শহরে ছড়িয়ে পড়ে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটিয়ে চীন থেকে বিশ্বের নানাপ্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশান ঘোষণা করলেন এটি প্রাণঘাতী ভাইরাস এর নাম নভেল করোনা বা কোভিড নাইন্টিন। এক অদৃশ্য আততায়ী পৃথিবীব্যাপী তাড়িয়ে ফিরতে লাগল। তিলে তিলে গড়ে ওঠা মানব সভ্যতা, তার চোখ ঝলসানো উন্নয়নের অহংকার সবই যেন এক লহমায় থমকে দাঁড়াল।


মানুষ ঘরবন্দী হয়ে পড়ল ভাইরাসের চেইনটা ভাঙতে। সরকার লকডাউন ঘোষণা করল যাতে মানুষ বাধ্য হয় ঘরে থাকতে। স্কুল কলেজ চাকরি প্রতিষ্ঠান সব একে একে বন্ধ হয়ে গেল। একটা ছোট্ট জীবাণুকে ঠেকাতে মানবসভ্যতা থমকে গেল।


এই ভাইরাসের আগমন প্রমাণ করে দিল প্রগতির এতো উন্নতি স্বত্তেও কাঠামোটাই ঝরঝরে। রাজ্যে ও দেশে লকডাউন ঘোষণা হওয়াতে রাজ্যের বাইরে থাকা অসংখ্য শ্রমিক কাজ হারিয়ে ঘরে ফিরতে চাইল কিন্তু ট্রেন বাস বন্ধ থাকায় মানুষের দুর্দশা তখন চরমে।  প্রকৃতির রুদ্ররূপের সাথে মানুষ যতো পরিচিত হতে থাকল ততই চিনতে পারল পারিপার্শ্বিককে। কোথাও সন্তান তার বৃদ্ধ পিতামাতাকে ভাইরাসের ভয়ে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে, কোথাও ডাক্তাররা জীবন মৃত্যু পণ করে রোগীর সেবা করছেন তাদের নিজের বাড়িতে প্রতিবেশীরা ঢুকতে দিচ্ছে না। সরকারি নিরিখে মৃত্যুকে দেখা হচ্ছে সংখ্যার বিচারে আর সেই অসম যুদ্ধের মুখোমুখি হয়ে মনোবল প্রায় সবারই তলানিতে পৌঁছে গেল। অদ্ভুত এক নৈঃশব্দ্য!!  শুধুই গরল নির্গত হচ্ছে প্রকৃতি মায়ের বুক থেকে আর মানবসভ্যতা স্তব্ধ হয়ে দেখছে প্রকৃতির খেলা।


ভাইরাসের ভয়ে সরকার ঘোষিত লকডাউনের পর এসে গেল অবধারিত সেই জীবিকা সমস্যা যার জেরে হাজার হাজার শ্রমিককে কাজ হারিয়ে ঘরে ফেরার পথে রাজনৈতিক অদূরদর্শিতায় ট্রেন বা যানবাহন না পেয়ে রাস্তায় হেঁটে হেঁটে মারা পড়তে হয়েছিল। ছোটো শিশু জামালো মাকদম  মারা গেল। মায়ের সাথে হাঁটতে হাঁটতে রাস্তায় মৃত মায়ের শরীর ধরে টানাটানি করা শিশুকে দেখে সভ্যতার ভিত নড়বড়ে হয়ে গেল। মানুষ ঘরবন্দী হয়ে উপলব্ধি করল বাঁচতে গেলে বিলাসিতা লাগেনা ন্যূনতম ডালভাতেই প্রাণধারণ করা যায়। রোজকার তাদের মৃত্যু নতুন করে ভাবতে শেখালো।


সামাজিক অবক্ষয়ের চিত্র এতোটাই ফুটে উঠল কোথাও একইরকম বা ভিন্নরকম দুর্ভোগের বার্তা বয়ে আনল। সংকটে মানুষ আরোও অভিসন্ধিপ্রবণ হয়ে উঠল, দুর্বল মানুষের পাশে দাঁড়ানো দূরঅস্ত নিজেরাই খাদ্য মজুতের চেষ্টায় এ ওকে টেক্কা দিতে লাগল। ট্রেন বন্ধ হয়ে বহু মানুষের রোজগার বন্ধ হয়ে  দিন আনা দিন খাওয়াদের দুর্দশার শেষ রইল না, মাস্ক স্যানিটাইজার প্রথম দিকে অপ্রতুল হলেও জোগান বাড়িয়ে পরে চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রাখা  সম্ভব হয়েছিল। কালোবাজারি হয়েছিল এখনও চলছে।


অনল নিশ্বাসী রথটা চলতে চলতে যখন পথের এক বাঁকে থমকে গেল মানুষের হাতে এলো অঢেল সময়। আত্মবীক্ষণের সময়। ভঙ্গুরতার আসল অর্থ সে খুঁজে পেল অসহায়তার মধ্যে। নৈঃশব্দ্য কি ভয়ঙ্কর মানুষ উপলব্ধি করল। শিশুরা ঘরে আটকে তাদের পড়াশোনা খেলাধুলা মানবিক বিকাশের ক্ষেত্রগুলোতে অনলাইন বা প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়ল যা একটি শিশুর পক্ষে খুব ক্ষতিকর।


করোনার থাবায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অর্থনীতি, শিল্প-বাণিজ্যের প্রতিটি ক্ষেত্রই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ল যে সেই ক্ষতির পরিমাপ করা সম্ভব নয়। ১৯৭১-এ যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে যেমন প্রথম থেকে শুরু করতে হয়েছিল, তেমনই হয়ত এই অবস্থা।

 

সমাজের সব পেশার মানুষের জীবনের ওপর পড়েছে করোনার কালো ছোবল। সংবাদপত্র, টেলিভিশনসহ গণমাধ্যমগুলোর কর্মীরা জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে পালন করে চলেছেন সংকটের কালো ছায়ার নিচে অনিশ্চিত জীবন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মী সঙ্কোচন হচ্ছে ক্রমশ, মানুষ তলিয়ে যাচ্ছে হতাশার কালো অন্ধকারে। আন্তর্জাতিক সাময়িকী ‘দি ইকোনমিস্ট’-এর একজন বিশ্লেষক লিখেছেন, ‘করোনা থাকবে, এর ভেতরেই আমাদের মানিয়ে চলতে হবে'।শ্রমিক, ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, বিচারক, আইনজীবী, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, হকার, রিকশাওয়ালা, ক্ষেতমজুর, পরিবহন শ্রমিক, মালিক, কুলি, দিনমজুর থেকে শুরু করে কাজের মানুষ, এমনকি পেশাদার ভিক্ষুকরা পর্যন্ত- সকলেই এক অজানা আতঙ্কে ভুগছে প্রাণধারণ থেকে জীবিকা বাঁচানোর তাগিদে। দুর্বল হয়ে পড়েছে পুরো শ্রমের আঙিনা। কর্মসংস্থানের এই ভেঙে পড়া ঝুঁকি কাটিয়ে আবার যথাযথরূপে পুনঃস্থাপন না করতে পারলে সমাজের সার্বিক স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনা দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে। আর সেই ভার বর্তায় রাজনৈতিক দলগুলির উপর।  কিন্তু তারা নিজ নিজ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সচেতন এই সংকটকালেও। করোনা পজিটিভ সংখ্যা বেশি দেখাতে সুস্থ দেরও পজিটিভ রিপোর্ট দিয়ে ভীত করিয়েছে, দেশে যখন মাত্র ৩০০ পজিটিভ রোগীর সংখ্যা তখন দোকানবাজার বন্ধ করে যখন ৩ লাখ পজিটিভ তখন মদ মিষ্টির বাজার খুলে খুল্লামখুল্লা সংক্রমণের ছাড়পত্র সরকারই ব্যবস্থা করে দিয়েছে। করোনা ভাইরাসের ইমিউনিটি বর্ধক ওষুধ  বা মাস্ক বা স্যানিটাইজারের বিজ্ঞাপন বা প্রচারের জন্য যে টাকা ব্যয় হয়েছে তার লভ্যাংশ যাদের ঘরে ঢুকেছে তারাই এই ব্যবস্থার তদন্তের শীর্ষে বসে আছে ফলে সেই সরষে দিয়ে আর ভূত তাড়ানো যাবেনা।


আজ দেশের ১% মানুষের হাতে ৭৩% সম্পদ, এরাই দেশকে নিয়ন্ত্রণ করছে আর কোটি কোটি মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে কোনো হেলদোল নেই নেতাদের। সবক্ষেত্রেই বেসরকারিকরণ চলছে কৃষিপণ্যের উপর মজুতের নিয়ন্ত্রণ উঠে গেল রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপে ফলে যা দিন আসছে না খেতে পেয়ে মানুষ মারা পড়বে।


তিমির এই অন্ধকারে আমরা আলোর জোনাকি হয়ে ক্ষুধার্তের মুখে অন্ন তুলে দিতে দেখা গিয়েছে অনেক স্বেচ্ছাসেবীদের। সরকারের ত্রাণসামগ্রী ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন পুলিশ। স্বজনের কাছে পরিত্যক্ত মৃতদেহ সৎকার করেছে পৌরসভা কর্মীরা।


করোনাকে কাজে লাগিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নির্মমতার পরিচয় দিয়েই চলেছে মানুষ তার সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে বেসরকারি হাসপাতালগুলির চিকিৎসা সৌজন্যে যেখানে করোনা ভাইরাসের কোনো ওষুধই আবিষ্কার হয়নি সেখানে হাসপাতালের বিল মেটাতে মানুষ জমি বাড়ি বিক্রি করে সর্বহারা হয়ে পড়েছে। এক ধ্বংসের কিনারে যেন দাঁড়িয়ে আছে মহাপৃথিবী।


সভ্যতার মহাসংকট উপস্থিত। চলতি বছরে ৭০ হাজার আগুন লেগেছে। আমাজনে সৌদি আরবের পেট্রোলিয়ামে আগুন জ্বলেছে। আমাজনের জঙ্গল এতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন  করে যে তা ধ্বংস হলে পৃথিবীর জলবায়ুতে স্থায়ী পরিবর্তন আসবে। বন উজাড় হলে বৃষ্টি কমবে গরম বাড়বে। বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাবার আর কোনোও উপায় থাকবে না। সর্বগ্রাসী উত্তাপে পুড়ে যাবে পৃথিবী। প্রজাতির টেঁকা মুশকিল হয়ে যাবে। পৃথিবী শঙ্কিত পৃথিবীর ফুসফুস জ্বলছে আর বিভিন্ন রকম ক্ষতি হয়ে চলেছে। রাজনৈতিক দলগুলো অক্সিজেন বোঝেনা ব্যবসা বোঝে, তাদের ব্যবসা করতে দিয়ে একঘন্টার অক্সিজেন মানুষকে কিনতে হচ্ছে প্রায় দাশ হাজার টাকারও বেশি মূল্যে। প্রকৃতি তো তা আমাদের বিনামূল্যেই দিয়ে চলেছে সেটা বিস্মৃত হয়ে যাওয়ার কারণেই আজ মানুষ চরম ক্ষতির মুখে।


"সভ্যতার সংকট" গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন মানুষের উপর বিশ্বাস রাখতে কিন্তু আজ কোন মানুষ আছে বিশ্বাসযোগ্য! রাজনীতি অর্থনীতি সংস্কৃতি সবই সেজ মানুষের হাত ধরেই চলেছে চরম অন্ধকারের দিকে। সভ্যতাকে অতিক্রম করে বর্বরতার প্রমাণ রাখতেই বেশি সচেষ্ট আজকের মানব।


ক্রান্তিকাল চলছে বিশ্বজুড়ে। সভ্যতার শীর্ষে থাকা দেশগুলোর বেপরোয়া মনোভাব।  জ্ঞানবিজ্ঞান নীতিনির্ধারণ জাতীয়তাবাদ  আন্তর্জাতিকতাবাদ সাম্রাজ্যবাদ আজ সব মিলেমিশে একাকার। কাউকে জিজ্ঞাসা করা যায়না কেমন আছেন বা  কাউকে বলতে পারা যায়না ভালো আছি কারণ এই ভালো থাকাটাই আজ প্রশ্নচিহ্নের মুখে। মানুষ এখন নিজের উপরেই সন্দিহান তাই রাজনীতিকরা দেখা গিয়েছে ধর্মের পর্দা ঝুলিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গিটাই বদলে দিয়েছে।


করোনাকাল শুধু রোগেরই ইতিহাস নয় বদলে দেওয়ারও গল্প। বদলে গেছে ধ্যানধারণা বদলে গেছে প্রেক্ষাপট বদলে গেছে বিলাসিতার সংজ্ঞা। মানুষ ফিরে এসেছে নিজের ঘরে চিনতে শিখেছে নিজেকে। করোনাকাল এসে জীবনের গতি বেশ অনেকটাই থামিয়ে দিলেও মুখ আর মুখোশের পার্থক্যটা স্বচ্ছ হয়ে গেছে। মানুষ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রমাণ দিয়েছে অন্তঃসারশূন্যতার! আজ ঘরে বাইরে মানুষ একা, কাউকে স্পর্শ করতে ভয় পায় সবসময় মৃত্যুভয় তাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে এসবকিছুর জন্য সে নিজেই দায়ী। সভ্যতাএ ঊষালগ্ন থেকে অঢেল পেয়ে যার উপর নির্মম অত্যাচার করে এসেছে সে আজ প্রতিশোধ নিচ্ছে। এটা হওয়ারই ছিল অনিবার্য ছিল এ ধ্বংস দেখা।


আশায় বাঁচতে হবে প্রতিদিন চোখ খুলে একটুকরো আকাশ দেখা সন্দেহাতীত গণতন্ত্রের জটিল উৎসব গুনে একদিন যেন সময় হাজির হয় চলমান ক্যালেন্ডার হয়ে! সেদিন যেন আকাশের রঙে কিছুমাত্র ফারাক হয়না, রক্তের গভীরে ধর্ম খুঁজতে খুঁজতে আর যেন না পাই শাসকের ভেতর শোষকের খোঁজ। নিজের ব্যর্থতা মনে প'ড়ে মাঘী পূর্ণিমার ভোরেও মনকেমন করে ওঠে যেন সেদিন। ভালো করেই আজ জানি মানিয়ে নেওয়াটাই বাস্তব, গুমোট হাওয়া বদলাবে না আর, জানলাজোড়া প্রশস্ত করলেও তবু  নিজের মধ্যে ডুবে যেতে যেতে আগামীর দুটো ডানায় বহু বিকেল জড়ো করে রেখে যেতে চাই ফলিত শোক আর না দেখা রক্তের দাগে।  আজকের দগদগে সময় আর বিষের ধোঁয়া নদীমাতৃক অক্ষর সাজাক ঠিক কর গুনে গুনে, শেষের সকালে এটুকুই আশা। ততদিন পুড়ে যাই তপ্ত বালুর উল্লাসে, অপেক্ষা সেদিনের। আজকের ডায়েরির পাতা দিয়ে যাক আগামীর হাতে সেই  স্বাধীনতা। সভ্যতা আবার নতুন রূপে ফিরে আসুক।


কপিরাইট শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় কর্তৃক সংরক্ষিত

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন